সুনামগঞ্জের প্রতিটি আসনে লড়বে জমিয়ত

সুনামগঞ্জের প্রতিটি আসনে লড়বে জমিয়ত

সংগৃহীত

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, সুনামগঞ্জ জমিয়তের ঘাঁটি। আমরা সুনামগঞ্জের প্রতিটি আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমিয়তের প্রার্থী দেখতে চাই। সুনামগঞ্জের প্রতিটি আসন থেকে আমরা লড়ব। দল যাকে নির্বাচিত করবে তাকে ঐক্যবদ্ধভাবে জয়ী করবেন।

নেতারা বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে দেশের সব অঙ্গনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের সব স্তরে নির্লজ্জভাবে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সব অঙ্গনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে। বৈষম্যহীম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি সেক্টরে আলেম-ওলামাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের উদ্যোগে নতুন বাংলাদেশে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত এক গণসমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।

নেতারা আরও বলেন, ১৫ বছরের স্বৈরশাসন থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হলে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত প্রত্যেক নেতাকর্মীকে মাঠে-ময়দানে কাজ করতে হবে।

স্বৈরাচারের দোসররা খোলস পাল্টিয়ে ডাকাতরূপে আত্মপ্রকাশ করছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, আওয়াম লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ছেলেপেলেরা অস্ত্র হাতে নেমেছে। আনসার বাহিনীর নামে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের নামে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত আমরা দেশকে ইসলামী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত করে ইসলামী মূল্যবোধের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত জমিয়তের সংগ্রাম চলবে। ইসলাম উপেক্ষিত হলে জমিয়ত সবটুকু দিয়ে মাঠে নামবে। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নেওয়ার পর দিল্লি থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, দেশের জনগণকে নিয়ে আমরা ভারতের ষড়যন্ত্র রুখে দেব। আওয়ামী লীগের যেসব সন্ত্রাসী মন্ত্রী, এমপিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

শিক্ষা বিভাগের সংস্কারের জন্য কমিশন করা হয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, কিন্তু সেখানে কোনো আলেমকে রাখা হয়নি, এই সংস্কার আমরা মানব না। একজন আলেমকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের অবজ্ঞা করে সামনে এগোনোর চেষ্টা করলে টুঁটি চেপে ধরব। আওয়ামী লীগ আনসার-পুলিশ হয়ে আসতে চেয়েছিল, এরা আগামীতে আলেম হয়েও আসতে চাইতে পারে। সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। ঘরে ঘরে জমিয়তের দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।

দলের জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজের সভাপতিত্বে শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে দুপুর ১২টায় গণসমাবেশের উদ্বোধন করেন দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা নুরুল ইসলাম খান।

জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা রফিক আহমদ উলাশনগরী ও মুখতার হোসাইন চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা জুনাইদ আল হাবীব, দলের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মজলুম জননেতা মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।

গণসমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল বছির, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন ও মাওলানা জামিল আহমদ আনসারী।

গণসমাবেশে সুনামগঞ্জ জেলার শীর্ষ আলেম-ওলামাদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাওলানা শায়খ সৈয়দ ফখরুল ইসলাম, মাওলানা মোস্তফা কামাল চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, মাওলানা জমির উদ্দীন কাতিয়া, মাওলানা ইকবাল বিন হাশিম, মাওলানা হাজী ইমদাদুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা আব্দুল হালিম, মুফতি বদরুল আলম তেঘরিয়া।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, পিকআপ, নৌকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী গণসমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।