যশোর এম এম কলেজে কাওয়ালি সন্ধ্যায় মাতোয়ারা ছাত্র জনতা
ছবি: প্রতিনিধি
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দ্রোহের গান ও কাওয়ালি সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে চেতনায় চিরঞ্জীব প্রাঙ্গনে কলেজের আয়োজনে এতে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। কাওয়ালি, দেশের কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা ও একক কবিতার মাধ্যমে এদিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেতে ওঠেন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। আয়োজকরা জানান, কাওয়ালি সমাজের প্রাণ, এই প্রাণকে জাগিয়ে তোলার জন্যই এই কাওয়ালি সন্ধ্যার আয়োজন।
হাবিবুল্লাহ নবী উল্লাহ , হে মোহাম্মদ, মাওলা, মাওলা, কুন ফায়াকুন ফায়াকুন। একের পর এক সুরের ঝংকার। কাওয়ালি সুরে মাতোয়ারা হাজার শিক্ষার্থী। কেউ মাথা নেড়ে, কেউ বা হাত তালি দিয়ে জানিয়েছেন উচ্ছ্বাস। সন্ধ্যায় দক্ষিণ বঙ্গের ঐতিহ্যেবাহী কলেজ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দ্রোহের গান ও কাওয়ালি সন্ধ্যায় মাতোয়ারা হয় হাজারো শিক্ষার্থী। দীর্ঘবছর পর এমন আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লা জানান, এই কাওয়ালি মুসলিম কবিদের হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে। কাওয়ালি সমাজের প্রাণ, এই প্রাণকে জাগিয়ে তোলার জন্যই এই কাওয়ালি সন্ধ্যার আয়োজন। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক শিক্ষার্থী আহত এবং নিহত হয়। এতে করে ক্যাম্পাস তার নিজস্ব গতি হারিয়ে ফেলে এবং অন্যান্য ছাত্ররাও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে এমন এক আয়োজন যেন সবার মাঝে তারুণ্যের সেই পুরোনো স্বাদ ফিরে এনে দিয়েছে।
তানভীর ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কখনো ক্যাম্পাসে কাওয়ালি হতে দেখিনি। এটা দেখে আজ আমি উজ্জীবিত, রোমাঞ্চিত। নিজেকে মুক্ত অনুভব করছি।’ অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, এই কাওয়ালি মুসলিম কবিদের হাজার বছরের ইতিহাস বহন করে। বাঙালি মুসলিম কবিরা অজস্র কবিতা ও গান রচনা করেছেন। এই সবকিছুই আমাদের সমাজের প্রাণ, এই প্রাণকে জাগিয়ে তোলার জন্যই ক্যাম্পাসে এই কাওয়ালি সন্ধ্যা। আমাদের মুসলিম কবিদের সৃষ্টিকে আমরা কাওয়ালির মাধ্যমে জাগিয়ে তুলব এবং বারবার আমরা উজ্জীবিত হব।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির বলেন, ‘এরকম আন্দোলন আমরা কখনো দেখিনি এবং এই আন্দোলন সফলতার দারপ্রান্তে পৌঁছাবে স্বপ্নেও ভাবিনি। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা আমরা এখন উপভোগ করছি। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, অনেকের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা পেয়েছি। আমরা আশা করি সমাজে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছিল, তা আর থাকবে না এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে পারব।’