ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের তাণ্ডব, বিদ্যুৎহীন ১৫ লাখ পরিবার
ছবিঃ সংগৃহীত।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় মিল্টন। স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্যাটাগরি-৩ এর এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এতে ফ্লোরিডার অন্তত ১৫ লাখ পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
ক্যাটাগরি-৩ ঝড়ের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো জলোচ্ছ্বাস। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, যেসব এলাকা ঝড়ের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি, সেখানে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ৩ থেকে ৪ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এ অবস্থায় কারিকেন মিল্টন আছড়ে পড়ার আগেই ফ্লোরিডা উপদ্বীপের প্রায় পুরো পশ্চিম উপকূলে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা জারি করা হয়।
হারিকেন সেন্টার আরও জানিয়েছে, বুধবার বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। সিয়েস্তা কি নামক একটি দ্বীপে এই গতি রেকর্ড করা হয়েছে। সিয়েস্তা কি দ্বীপটি ফ্লোরিডার টাম্পা বে উপকূল থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে অবস্থিত। এই দ্বীপে প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দা আছে।
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস আশা প্রকাশ করেছিলেন যে ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূল খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে টাম্পা উপসাগরের উপকূলের অবকাঠামো ও জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তবে সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঢেউয়ের উচ্চতা ১৩ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।
গভর্নর ডিস্যান্টিস জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের কারণে এরই মধ্যে ১৯টি আলাদা টর্নেডোর জন্ম হয়েছে, যার ফলে অঙ্গরাজ্যটির বিভিন্ন স্থানে ১২৫টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে অধিকাংশ বাড়িই ছিল অস্থায়ী। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার এরই মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়কে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। জানিয়েছে, এর ফলে ফ্লোরিডার মধ্যভাগের অঞ্চলগুলোতে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএসের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফ্লোরিডায় বুধবার রাতে ১৫ লাখেরও বেশি বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন ছিল। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হার্ডি কাউন্টির পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সারাসোটা ও মানাটি কাউন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছিল।
এছাড়া, কয়েক ডজন টর্নেডো ও ঝড়ের জলোচ্ছ্বাসের বিষয়ে সতর্কতা জারি করায় লক্ষাধিক মানুষ বুধবার অঙ্গরাজ্যটি থেকে সরে গেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, ফ্লোরিডার পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের জন্য সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক কারিকেনের রেকর্ড গড়তে পারে মিল্টন।