ভিন্ন ধর্মী এক সেবায় উৎসর্গ , সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে : ইমরুল কায়েস

ভিন্ন ধর্মী এক সেবায় উৎসর্গ , সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে : ইমরুল কায়েস

নিউজ জোন ডেস্ক

‘‘জীবনের প্রয়োজনে জীবন” শ্লোগান বুকে ধারন করে কিছু টগবগে তরুণ সুবিধা বঞ্চিত শিশুর উন্নয়ন ও রক্তদান কর্মসূচীর উদ্যোগ গ্রহন করে তিন বছর আগে।  মোঃ ইমরুল কায়েস এই স্বপ্নের ফাউন্ডেশন আঁকেন। ইমরুল কায়েসের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোমী মনোবলের কারনেই যাত্রা শুরু করে ‘উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ যেটি আজ সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ২ লাখ তরুনকে নিয়ে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত সংগঠন।

ইমরুল কায়েস জানান, বিগত তিন বছরের পথচলা একদমই মসৃন ছিল না। উপহাস, অবিশ্বাস, তুচ্ছজ্ঞান ইত্যাদিকে পিছনে ঠেলেই আমরা কাজ করেছি। তবে ভালবাসা আর উৎসাহ দেবার লোকও কম ছিলো না। মূলতঃ এই সকল উৎসাহেই আমি তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে সামনের পথে হেটেছি। উৎসর্গ আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা অসহায়, আত্মপীড়িত, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য এক আশ্রয়স্থল। দেশের ৬৪টি জেলার নিবেদিত প্রাণ প্রায় দুই লক্ষ তরুণ উৎসর্গ পরিবারের নিবেদিত কর্মী। উৎসর্গ প্রপান্তর গ্রাম আঞ্চলের সকলশ্রেনীর মানুষের রক্তদানে উৎসাহিত করা এবং ফ্রি রক্তর গ্রুপ নির্নয় করে থাকে। উৎসর্গের তরুনরা অনলাইনের মাধ্যমে অসহায় মূমূর্ষ রুগীদের ফ্রি রক্ত দান করে থাকেন এর মাধ্যমে দেশের সকল জেলার মূমূর্ষ রুগীরা উপকৃত হন। উৎসর্গের লক্ষ্য রক্তের অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে যেন কেউ বঞ্চিত না হয়।


অন লাইন ব্লাডব্যাংক ছাড়াও উৎসর্গ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে-  ফ্রী ব্লাড গ্রুপিং,  দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ফ্রি মেডিকেল টিম পরিচালনা, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের উন্নয়ন, দূঃস্থ জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করা, মাদকের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটি জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছরের মার্চে ভারত ও বাংলাদেশের ভলেন্টিয়ারদের অংশগ্রহণে একটি সাইকেল র‌্যালীর আয়োজন করে।
পথচলার ৩ বছরে উৎসর্গ সমাজ সচেতনতায় বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর উল্লেখযোগ্য আয়োজন ছিল-২০১৬ সালের নভেম্বরের ২ তারিখে ঢাকার শেওড়াপারাতে জাতীয় রক্তদাতা দিবস উৎযাপনের লক্ষে উৎসর্গ কর্তৃক প্রায় ৪০০ স্বেচ্চাসেবকের অংশগ্রহণে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন; প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শীতার্থ মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন; ২০১৭ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া গালর্স পাইলট হাইস্কুলে প্রায় ৮০০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে নিয়ে রক্তদান, নারী অধিকার, নারী স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ে বিশেষ ক্যাম্প, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক বিতরন এবং তাদের পরিবারকে ঈদের দিনের খাবার বিতরন কার্যক্রম হিসাবে প্রতিবছর ‘ঈদের হাসি সবার মাঝে’ আয়োজন; বন্যার্তদের পাশে দাড়ানো; বন্যায় যমুনার চরে আটকে পড়া ২১০টি পরিবারের মানুষের মাঝে ১০ দিনের খাবার ও প্রায়োজনীয় সকল ঔষধ ও সামগ্রী বিতরণ, দেশের ৬৪ জেলায় সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে একত্রিত করে দেশে প্রথম বারের মতে উৎসর্গ আয়োজন করে সেচ্ছাসেবী মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-২০১৯, যেখানে দেশের ৬৪ জেলা থেকে আগত প্রায় ৭৩টি সংগঠনের ৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহন করে। বিশ^ ভালবাসা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ‘ওদের হাসি ভালোবাসি’ শিরোনামে বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ বছর উৎসর্গের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বন্যার্তদের মাঝে সম্পূর্ন ফ্রি স্বাস্থসেবা প্রদান ও প্রাথমিক প্রয়োজনীয় ঔষধ বিতরন করা হয়। এই কার্যক্রমের অংশ হিসাবে উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বন্যাদূর্গত প্রায় ১৫০০ শত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চত করে।

উৎসর্গ ভবিষ্যতে কি করতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে উৎসর্গের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস জানান,
দেশের তৃণমূল পর্য্যায়ের জনগোষ্ঠীর ব্লাড গ্রুপিং নির্ণয় করে তাদেরকে জরুরী অবস্থায় চিকিৎসা প্রদানে সাহায্য করা। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য কার্যক্রম হিসেবে সকল শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করা, ইয়াতিম, অসহায়, দরিদ্র ও পথশিশুদের জন্য এতিমখানা তৈরি করে তাদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা,  বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা পূর্বক স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা, বৃদ্ধাশ্রমে যেন কাউকে যেতে না হয় সে লক্ষ্যে নিরুৎসাহিত করণ কার্য্যক্রম গ্রহন করা। এ বিষয়ে পরিবার থেকে শুরু করে সামাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সাথে নানমূখী কার্য্যক্রম গ্রহন করা, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রাম পর্য্যায়ে চিকিৎসা প্রদানের মাধমে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা প্রদানে সাহায্যে করা এবং তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও আচার- আচরণ পরিবর্তনের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং মাতৃ-মৃত্যুর হার কমানোর লক্ষ্যে গর্ভবতীদের নিয়মিত এন্টিনেটাল চেকাপ ও নিরাপদ প্রসবের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তাবায়ন কল্পে কার্য্যক্রম গ্রহণ  করা।

মাদক রোধকল্পে বিভিন্ন কার্য্যক্রম গ্রহণ পূর্বক মাদক নিয়ন্ত্রনে সরকারের গৃহিত কার্য্যক্রম বেগবান করা। ইমরুল কায়েসের মতে, আমরা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি। তবে সাংগঠনিক কাজের শক্তি বেশি। আমাদের অনেক সামাজিক সমস্যা রয়েছে। আমরা ব্যক্তিগত বা সমষ্ঠিগত যেভাবেই পারি না কেন, আমাদেরকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রত্যেকের নিজস্ব পরিমন্ডলে দায়িত্ব পালন করলেই আমাদের সকল সামাজিক সমস্যা দূর হবে। সামাজিক সমস্যা দূরীকরণের এই আন্দোলনে উৎসর্গ সব সময়ই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি