ব্রাজিলে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আক্রান্ত আড়াই লাখের কোটায়

ব্রাজিলে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আক্রান্ত আড়াই লাখের কোটায়

ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে বুলেটের গতিতে বাড়ছে করোনাক্রান্তের সংখ্যা। যা আড়াই লাখের কোটায় পৌঁছেছে। প্রাণঘাতি ভাইরাসটির প্রকোপ হঠাৎ করে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, হাসপাতালগুলোতে আইসিইউতো দূরের কথা সাধারণ বেডও এখন খালি পাওয়া যাচ্ছে না।

এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও নেই জরুরি অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

দেশটির বৃহৎ শহর সাও পাওলোর মেয়র ব্রুনো কভোস বলছেন, ‘জরুরি ভিত্তিতে নতুন বেডের ব্যবস্থা না করতে পারলে অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, একেবারেই ভেঙে পড়বে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা।’ খবর বিবিসির।

তিনি বলেন, ‘সাও পাওলোর হাসপাতালগুলোতে অনেক আগেই ৯০ শতাংশই রোগীতে পূর্ণ হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের আগে নতুন রোগী ভর্তি অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে পায় ৮ হাজার মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণ গেছে আরও ৪৮৫ জনের। এতে করে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ১১৮ জনে ঠেকেছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা সাও পাওলোয়। সেখানে ৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা। আর এ নিয়েই মূলত প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ছিলেন বৃহৎ শহরটির গভর্নর।

দেশটি ইতিমধ্যে আক্রান্তে মৃত্যুপুরী ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানিকে ছাপিয়ে গেছে। আক্রান্তে চারে থাকা যুক্তরাজ্যের পরেই এখন ব্রাজিল। অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত ব্রিটেনকে ছাড়িয়ে যাবে লাতিন আমেরিকার দেশটি।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘পরীক্ষা সীমিত হারে করার কারণে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। বেশি সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ হবে।’

তবে, এতকিছুর পরও হুশ ফেরেনি প্রেসিডেস্টে বোলসোনারোর। এখন পর্যন্ত অনেকটা স্বাভাবিক ব্রাজিলের জীবনযাত্রা। তবে, বেশির ভাগ রাজ্যের গভর্নর নিজ নিজ সিদ্ধান্তানুযায়ী লকডাউন পালন করছে।

দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজারের বেশি মানুষের দেহে বাসা বাঁধছে ভাইরাসটি। তারপরও জরুরি অবস্থার ঘোষণাার পক্ষপাতি নন বোলসোনারো। আর এ নিয়ে গত একমাসে দুই স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ দেখেছে দেশটির জনগণ। সবশেষ গত শুক্রবার নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেলসন তাইশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একমত হতে না পারায় পদ থেকে সরে যান।