ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে সমতায় শ্রীলঙ্কা
সংগৃহীত
উইকেটে স্পিনারদের জন্য টার্ন মিলল বেশ। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগালেন দুনিথ ওয়েলালাগে, মাহিশ থিকশানারা। তাদের স্পিনের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। বড় জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল শ্রীলঙ্কা। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে লঙ্কানদের জয় ৭৩ রানে।
ডাম্বুলায় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কার ফিফটিতে ২০ ওভারে শ্রীলঙ্কা করে ১৬২ রান। জবাবে ৪০ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ অল আউট হয় ৮৯ রানে। এই দুই দলের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার একশর নিচে গুটিয়ে গেল কোনো দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এর চেয়ে কমে অল আউট স্কোর আছে আর কেবল ৪টি।
ক্যারিবিয়ানদের ১০ উইকেটের ৯টিই নেন শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা। এই সংস্করণে অভিষেকে ৪ ওভারে মাত্র ৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার ওয়েলালাগে। ২১ বছর বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার ‘ডট’ বল খেলান ১৬টি, দেননি কোনো বাউন্ডারি। অফ স্পিনার থিকশানা, অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার চারিথ আসালাঙ্কা ও লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার শিকার ২টি করে। ম্যাচের সেরা অবশ্য তাদের কেউ নন। ৪৯ বলে ৯ চার ও এক ছক্কায় ৫৪ রানের ইনিংস খেলে পুরস্কারটি পান নিসাঙ্কা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ৩ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলতে পারে কেবল ৮ রান, ছিল না কোনো বাউন্ডারি। তবে, পরের ওভারে পেসার শামার জোসেফকে টানা পাঁচটি চার মারেন নিসাঙ্কা। এই ওভারে আসে মোট ২৫ রান।
পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কা করে বিনা উইকেটে ৫২ রান। দশম ওভারে কুসাল মেন্ডিসকে (২৫ বলে ২৬) ফিরিয়ে ৭৭ রানের শুরুর জুটি ভাঙেন শামার স্প্রিঙ্গার। এই পেসারের আগের বলটিতে ফিরতে পারতেন নিসাঙ্কাও, কিন্তু পয়েন্টে ক্যাচ নিতে পারেননি রোস্টন চেইস। তখন ৩৬ রানে খেলছিলেন নিসাঙ্কা। ১৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১১৫ রান। শেষ দিকে নিয়মিত উইকেট হারানোয় সংগ্রহটা বড় হয়নি তাদের। শুরুটা ভালো করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কুসাল পেরেরা (১৬ বলে ২৪) ও কামিন্দু মেন্ডিস (১৪ বলে ১৯)। ৪৭ বলে ফিফটির পরপর বিদায় নেন নিসাঙ্কাও। শেষের দাবি মেটাতে পারেননি অধিনায়ক আসালাঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকসারা।
একই মাঠে প্রথম ম্যাচে ১৮০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৫ উইকেটে জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার শুরু থেকেই উইকেট হারায় নিয়মিত। ওই ম্যাচে শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়া ও বিস্ফোরক ফিফটি করা ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস এবার দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি। তৃতীয় ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে কিংকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ওয়েলালাগে। বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে স্টাম্পড হন কিং। নিজের পরের দুই ওভারে ওয়েলালাগে ধরেন আরও দুই শিকার, ফিরিয়ে দেন চেইস ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে। মাঝে থিকশানার শিকার লুইস।
দ্বিতীয় ওভারে দুটি চারের পর মাঝে টানা ৩৬ বলে কোনো বাউন্ডারিই পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আসালাঙ্কা একই ওভারে চার বলের মধ্যে বোল্ড করে দেন গুডাকেশ মোটি ও শেরফেইন রাদারফোর্ডকে। ম্যাচে হাসারাঙ্গার প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হন রোমারিও শেফার্ড। একাদশ ওভারে ৪০ রানে ৭ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ নব্বইয়ের কাছাকাছি যেতে পারে মূলত অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল (১৭ বলে ২০) ও আলজারি জোসেফের (১০ বলে ১৬) ব্যাটে। একই মাঠে আগামীকাল বৃহস্পতিবার হবে শেষ ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৬২/৫ (নিসাঙ্কা ৫৪, কুসাল মেন্ডিস ২৬, কুসাল পেরেরা ২৪, কামিন্দু ১৯, আসালাঙ্কা ৯, রাজাপাকসা ৫*, হাসারাঙ্গা ৬*, আলজারি ৪-০-৩৩-১, শামার ৩-০-৩৫-১, মোটি ৪-০-১৩-০, শেফার্ড ৩-০-২৩-২, স্প্রিঙ্গার ২-০-২৪-১, চেইস ৪-০-২৪-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.১ ওভারে ৮৯ (কিং ৫, লুইস ৭, ফ্লেচার ৪, চেইস ০, রাদারফোর্ড ১৪, মোটি ৪, পাওয়েল ২০, শেফার্ড ১, স্প্রিঙ্গার ৭, আলজারি ১৬, শামার ৫*; থিকশানা ৩.১-০-৭-২, থুশারা ১-০-৯-০, ওয়েলালাগে ৪-০-৯-৩, আসালাঙ্কা ২-০-৬-২, কামিন্দু ১-০-১০-০, হাসারাঙ্গা ২-০-৩২-২, পাথিরানা ২-০-১২-১)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭৩ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুটির পর ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: পাথুম নিসাঙ্কা