মাদরাসা ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, ফেরত চাওয়ায় পরিচালককে মারধর

মাদরাসা ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, ফেরত চাওয়ায় পরিচালককে মারধর

প্রতীকী ছবি

পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি মাদরাসার উন্নয়ন ও সংস্কার ফান্ডের টাকা আত্মসাতের মামলা দায়ের করায় মাদরাসা পরিচালক মো. মাহমুদ হাসানকে মারধর, মাদরাসার অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে মাহবুবুল আলম নামে একজন স্থানীয় আওয়ামী সমর্থকের বিরুদ্ধে। 

শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার চরসাহাপুর গ্রামের কদিমপাড়া এলাকার দারুল কুরআন মাদরাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এভাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনায় ওই মাদরাসার পরিচালক ঈশ্বরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে অভিযোগের নামীয় আসামি মাহবুবুল আলম মাদরাসার সংস্কার কাজ দেখে নিজেকে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। পরে ব্যাংকের মাধ্যমে কুয়েত দেশভিত্তিক মাদরাসার অনুদানমূলক বিল্ডিং নির্মাণ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাদরাসার সংস্কার ফান্ডের সাত লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে মাদরাসা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। দীর্ঘদিন পর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে তাকে প্রদানকৃত সংস্কার ফান্ডের টাকা ফেরত চাইলে একটি স্ট্যাম্প করে নির্ধারিত সময়ে সেই টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।

অঙ্গীকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে ভুক্তভোগী মাদরাসা পরিচালক মো. মাহমুদ হাসানকে নানা হুমকি-ধামকি দেন সেই প্রতারক মাহবুবুল আলম। মাদরাসার সংস্কার কাজ চলমান থাকায় আর্থিক সংকটে তা বন্ধ হয়ে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হতে থাকে। মাদরাসার সেই সংস্কার ফান্ডের টাকা আদায় করতে ভুক্তভোগী মাদরাসা পরিচালক মো. মাহমুদ হাসান পাবনা জেলা দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

পরে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিতে মুঠোফোনে মাদরাসা পরিচালককে নানা হুমকি-ধামকি দিয়েও মামলা প্রত্যাহার না করায় মামলার প্রধান আসামি মাহবুবুল আলমসহ আরো ৫/৬ জন দেশীয় অস্ত্র, লোহার পাইপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মাদরাসায় এসে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমি দৌড়ে পালিয়ে গেলে তারা অফিসের সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও নগদ ৪৩ হাজার ৪শ’ টাকা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী। 

এ ঘটনায় স্থানীয়রা বলেন, মাদরাসার সংস্কার কাজ দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংস্কার ফান্ডের টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন মাহবুবুল আলম নামে এক প্রতারক। শনিবার এসে মাদরাসায় ভাঙচুর ও পরিচালককে মারধর করে আহত করেছেন। তার শাস্তি দাবি করছি।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার করেছি। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।