সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ সইয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ সইয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) সই করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই চুক্তি সইয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ডা. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। যার মধ্যে স্বপ্লোন্নত দেশ হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা হারানো অন্যতম।

এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওইসব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে ওইসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে, বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ অন্যতম।

সিঙ্গাপুর বিশ্বের ৩২তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ নিজ নিজে পক্ষে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ উভয় দেশ নেগোসিয়েশন শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।

যৌথ ঘোষণায় বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্রবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লো এবং সফররত সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদল ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যত দেশের সঙ্গে পারি আমরা এফটিএ সই করব। আমরা চেষ্টা করছি আসিয়ানে যাওয়ার জন্য। সিঙ্গাপুর এ বিষয়ে সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা তো ব্যবসা করবেই। ট্রানজেকশনের বিষয়ে আমরা কথা বলব, হুট করে একটা কথা বলে চলে গেলাম বিষয়টা তো সে রকম না। আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে উত্তরণ করতে চাই। লাফ দিলে তো হবে না। ট্রানজেকশনে যেতে হলে পথ, শর্ত ও অর্থ এসব কিছুর দরকার হয়। সব কিছু আপনারা যথাসময়ে জানতে পারবেন। আমরা হুট করে কিছু করব না। আবেদন অনেক আছে ট্রিপস, ডব্লিউটিএ এর বিষয় আছে। এগুলো ভেবে চিন্তে আমরা করবে। বাংলাদেশের স্বার্থে ও জনগণের স্বার্থে যেটা লাগে সেটাই আমরা করবে।

কতোদিনের মধ্যে এই এফটিএ চুক্তি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা আজকে আমদানি-রপ্তানি নিয়ে আলোচনা করেছি। সময়ের বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। লম্বা সময় লাগতে পারে আবার ছোট্ট সময়ের মধ্যেও হতে পারে। যথাসময়ে আপনারা সব জানতে পারবেন। আমরা কোনো নির্দিষ্ট সময় বলতে পারব না।