চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ ও কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

প্রতীকী ছবি

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ নেতা শোয়েব রিগান ও কৃষকলীগ নেতা মহসিনের  ওপর নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরে  এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগ নেতা সোয়েব রিগান (২৫) চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাঝেরপাড়ার আজম আলীর ছেলে। রিগান চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি।

মহাসিন রেজা (৫০) চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাঝেরপাড়ার মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে। মহাসিন রেজা ও সোয়েব রিগান সম্পর্কে মামা ভাগ্নে। মহাসিন বাংলাদেশ কৃষক লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যার পর ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি শোয়েব রিগান তার অসুস্থ পিতাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যান। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অসুস্থ পিতাকে দেখে রিগান ও তার মামা মহাসিন সদর হাসপাতালে চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় একদল যুবক প্রকাশ্যে শোয়েব রিগানের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এসময় তার সাথে থাকা মামা কৃষকলীগ নেতা মহাসিন ভাগ্নেকে রক্ষা করতে গেলে অস্ত্রধারীদের এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর জখম হন।

 এসময় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দুজনকেই তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। এই হামলার ঘটনা কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে গত তিন দিনে চুয়াডাঙ্গা শহরে পৃথক স্থানে চারজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখমের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, পুরো শহরজুড়ে থমথমে ভাব বিরাজ করছে।হামলাকারীরাও ক্ষমতাসীন দলের একই গ্রুপের কর্মী-সমর্থক বলেও জানা যায়।

গুরুতর জখম শোয়েব রিগান জানান, ‘ছাত্রলীগ নেতা জিম, কালাম, রাব্বি, বাদশা, শাকিবসহ কয়েকজন আমাকে ও আমার মামাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। ঘাতকদের সবাইকে আমি চিনি।’

 চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অইসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, ‘ জেলা ছাত্রলীগের একই গ্রুপের কর্মী-সমর্থকের মধ্যে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

ঘটনার পরপরই চুয়াডাঙ্গা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দুই ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখমের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। একইসাথে অভিযুক্তদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।’

এদিকে, হাসপাতাল থেকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে পরিবারের সদস্যরা রিগানকে নিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়। এর পরপরই অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে রিগানের মামা মহাসিনকেও ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জুলাই মাসের ১৮ তারিখে পূর্বশত্রুতার জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের অন্য একটি গ্রুপের কর্মীরা শোয়েব রিগানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এক বছরেরও বেশি সময় চিকিৎসা নিয়েও রিগান এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে রোববার আবারো রিগানের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটলো।