মৃত নারীদের ধর্ষণ করত মুন্না

মৃত নারীদের ধর্ষণ করত মুন্না

সিআইডির হাতে আটক মুন্না ভগত।

মোহাম্মদপুর এবং মিরপুর এলাকায় গত এক বছরে ৫ টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। যার ৫ জনই কিশোরী। যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭। ৫টি আত্মহত্যার ৪টি মিরপুর এবং ১টি ঘটেছে মোহাম্মদপুর এলাকায়। ২ টি ঘটেছে ২০১৯ সালের মার্চ ও অক্টোবর মাসে। বাকি তিনটির একটি এ বছরের মার্চ ও ২টি আগস্ট মাসে ঘটেছে। সময়, এলাকা, বয়স ও লিঙ্গ একই ধরনের হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সিআইডির ধারণা হয় ভিক্টিমরা কোনো সিরিয়াল কিলারের শিকার।

এর আগে ১০ নভেম্বর সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের বিশ্লেষকরা নড়েচড়ে বসেন। 'কোডেক্স' নামে যে সফটঅয়্যারে ডাটা বিশ্লেষণ করা হয় সেটি সংকেত দেয় যে ৫টি মৃতদেহে এক ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। পাঁচ ভিক্টিমই কিশোরী।

সিআইডি জানায়, সিরিয়াল কিলার আরও হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে এমন আশঙ্কা নিয়ে গুরুত্বসহকারে তদন্তে নামেন তারা। তারা মোহাম্মদপুর ও কাফরুল থানায় হওয়া ৫টি অপমৃত্যুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেন। তাতে তারা জানতে পারেন, ৫টি মামলার ভিক্টিমের সুরতহালে কোনো ধরনের জোরজবরদস্তির আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তে প্রতিটি ঘটনাকে আত্মহত্যা বলা হয়েছে।

এছাড়া, প্রত্যেক ভিক্টিম দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সব মিলিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা সিদ্ধান্তে আসেন তাদের প্রাথমিক ধারণা ভুল। এরপরই ওই অভিনয়ের আশ্রয় নেয় সিআইডি।

এবার সিআিইডি অন্য পন্থা অবলম্বন করে। তাদের সন্দেহ হয় মর্গের মধ্যে থাকা ব্যাক্তিদের উপর। সিআইডি জানতে পারে মর্গের পাশের রুমেই মুন্না ভগত (২০) থাকে। এ থেকে তাঁদের সন্দেহ আর গাড় হয় মুন্নার উপর। ডোম সহকারী মুন্না ভগতকে  টার্গেট করে তার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে সিআইডির দুই সদস্য।

তার সাথে বিভিন্ন সময় আড্ডা দেয় তাঁরা। একদিন মুন্নার ফেলে দেওয়া সিগারেট সংগ্রহ করেন সিআইডি সদস্যরা। পরে তার ডিএনএ পরীক্ষা করলে আগের ৫ টি মৃত দেহে পাওয়া ডিএনএর সাথে মিলে যায়।
 
এ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) তাকে আটক করে সিআইডি।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ডোম জতন কুমার লালের ভাগিনা মুন্না ভগত। সে মামার সঙ্গেই ওই হাসপাতাল মর্গে সহযোগী হিসেবে কাজ করত। দুই-তিন বছর ধরে মুন্না মর্গে থাকা মৃত নারীদের ধর্ষণ করে আসছিল।