মানবপাচারে জড়িত দুই বিদেশি এয়ারলাইন্স

মানবপাচারে জড়িত দুই বিদেশি এয়ারলাইন্স

সিআইডির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে মানবপাচারের সঙ্গে বিদেশি দুইটি এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ওই দুই এয়ারলাইন্সের ৫-৭ জন কর্মকর্তাকে এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই যাদের পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই ভিজিট ভিসা বা কনফারেন্স ভিসায় নেয়া হয়েছে। এসব ভিসায় কেউ কোনো দেশে গেলে তাদের রিটার্ন টিকিট থাকার কথা। কিন্তু যাদের পাচার করা হয়েছে তাদের কেউ-ই রিটার্ন টিকিট নেননি।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মানবপাচারের ঘটনায় বিদেশে যাদের পাচার করা হয়েছে তাদের সবাইকেই ভিজিটর/ কনফারেন্স ভিসায় পাঠানো হয়েছে। তবে এসব ভিসায় যাওয়া ভিজিটরদের রিটার্ন (ফিরতি) টিকিট থাকার কথা থাকলেও পাচার হওয়া কারও ফিরতি টিকিট ছিল না। এটা এয়ারলাইন্সের একটি বড় ত্রুটি। আর অধিকাংশ মানবপাচার এই দু’টি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমেই হয়েছে।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারে জড়িত পলাতক কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে পুলিশ সদর দফতরের মাধ্যমে ইন্টাপোলে আবেদন জানানো হবে। এর আগে গত ১৮ অক্টোবর ৬ জন পলাতক আসামিকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আবেদন জানানো হয়। গত ২৭ নভেম্বর ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে। এরা হলেন- মিন্টু মিয়া (কিশোরগঞ্জ), তানজিমুল ওরফে তানজিদ (কিশোরগঞ্জ), জাফর ইকবাল (কিশোরগঞ্জ), নজরুল ইসলাম মোল্লা (মাদারীপুর), শাহাদাত হোসেন (কিশোরগঞ্জ) ও স্বপন (কিশোরগঞ্জ)।  গত ২ জুন তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে তানজিমুল ইতালিতে পালিয়ে আছেন বলে জানা গেছে।

মানবপাচারের মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ২৬ মে লিবিয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনার পর মানবপাচারের ২৬ মামলার মধ্যে ২৫টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এখন পর্যন্ত ১৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হবিগঞ্জে দায়ের করা একটি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৯ সালের মে মাস থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৮ ব্যক্তিকে উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে যায় পাচারকারীরা। ইতালি ও স্পেনে পাঠানোর কথা বলে অনেককে লিবিয়ার বেনগাজীতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদেকে নির্যতন করে সেই ছবি স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপন আদায় করা হত।

মুক্তিপণ আদায়ের পর গত ২৬ মে নির্বিচারে গুলি করে ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১২ জন গুরুতর আহত হয়। গত ৩ অক্টোবর সিআইডির উদ্যোগে ৯ জন ভিকটিমকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।