হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত

হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত

হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফজিলত

জামাতে নামাজ পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কেউ কেউ এটাকে ওয়াজিব বলেছেন। আর জামাতে নামাজ পড়ার জন্য হেঁটে মসজিদে যাওয়া বেশি সওয়াবের কাজ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন বস্তুর সন্ধান দেব না, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা গুনাহ মিটিয়ে দেবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন? তা হলো, কষ্টকর অবস্থায়ও পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি পদচারণ এবং এক সালাতের পর অন্য সালাতের জন্য অপেক্ষা করা...।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫১)

জামাতে নামাজ পড়ার জন্য হেঁটে মসজিদে গেলে ওই ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আবু উমামা আল-বাহেলি (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, তিন ধরনের মানুষ মহান আল্লাহর জিম্মায় থাকে। ১. যে আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য বের হয়, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে। সে মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান অথবা নিরাপদে ফিরে এলে তাকে নেকি এবং গনিমতের প্রাপ্য অংশ দান করেন। ২. যে ব্যক্তি জামাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে ধাবিত হয়, সেও আল্লাহর জিম্মায় থাকে। এ অবস্থায় সে যদি মারা যায়, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করেন। আর মসজিদ থেকে ফিরে এলে তার প্রাপ্য সওয়াব ও যুদ্ধলব্ধ সম্পদের অংশীদার করেন। ৩. যে ব্যক্তি নিজ বাড়িতে প্রবেশ করার সময় পরিবারের লোকজনকে সালাম দেয়, সেও মহান আল্লাহর জিম্মায় থাকে।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১০৯৪)। হেঁটে মসজিদে আগমনকারী কিয়ামতের দিনের সুসংবাদপ্রাপ্ত। বুরায়দা (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যারা (জামাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্য) অন্ধকার রাতে মসজিদে  হেঁটে হাজির হয়, তাদের কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দাও।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭৮১)

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় হাদিসবিশারদরা বলেন, কিয়ামতের দিন মুমিনদের মুখমণ্ডল চমকাতে থাকবে। যেমন—আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের নূর পূর্ণ করে দিন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)

জামাত শেষ হওয়ার পর মসজিদে গেলেও জামাতে শরিক হওয়ার সওয়াব মিলবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করল। অতঃপর মসজিদে গিয়ে দেখল যে লোকজন সালাত আদায় করে ফেলেছে। আল্লাহ তাকে ওই ব্যক্তির মতো পুরস্কার দেবেন, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করেছে ও শুরু থেকে উপস্থিত থেকেছে। তাদের নেকি থেকে মোটেই কম করা হবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৬৪)

মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে সওয়াব। জাবের বিন আবদিল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মসজিদে নববীর আশপাশে কিছু জায়গা খালি হলো। এটা দেখে বনু সালামা মসজিদে নববীর কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ খবর রাসুল (সা.) জানতে পারলে তিনি তাদের বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে তোমরা মসজিদের কাছে চলে আসার ইচ্ছা করছ! তারা বলল, জি হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা এমনটা ইচ্ছা করেছি। তিনি বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমরা তোমাদের বাড়িতেই থাকো। কেননা এতে (দূরত্বের কারণে) মসজিদে আসতে তোমাদের পদক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের পদচিহ্ন (তোমাদের আমলনামায়) লিখিত হবে। তারা বলল, (মসজিদের কাছে) স্থানান্তরিত হওয়া আমাদের আনন্দ দেবে না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৬৫)