প্রথমবারের সফটওয়্যারের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু

প্রথমবারের সফটওয়্যারের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু

প্রথমবারের সফটওয়্যারের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু

মহামারি করোনার কারণে চলতি বছর প্রথমবারের মতো একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফরম পূরণ শুরু করেছে শিক্ষাবোর্ডেগুলো। অনলাইনে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার ১২ আগস্ট থেকে।  চলবে আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণের ফি পরিশোধ করতে পারবে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। চলতি বছর প্রথমবারের মতো একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফরম পূরণ শুরু করেছে শিক্ষাবোর্ডেগুলো। পুরো কার্যক্রমটি চলবে অনলাইনে।

গত ৩১ জুলাই এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।  

আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১২ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ফরম পূরণ কার্যক্রম চলবে। আর ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ফরম পূরণের জন্য শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক এসএমএম পাওয়া শিক্ষার্থীরা ফি পরিশোধ করতে পারবেন। বিজ্ঞান বিভাগে ১১৬০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১০৭০ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। বেশি অর্থ আদায়ের প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফরম পূরণ প্যানেল বন্ধ করাসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১১ আগস্ট সম্ভাব্য পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। করোনার কারণে এবার কোনো নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। ফরম পূরণের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে। কোনো অবস্থায় শিক্ষার্থী বা অভিভাবকদের সশরীরে প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে না।

এইচএসসির ফরম সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া ফোন নম্বরগুলো হলো ০২-৯৬৬৯৮১৫, ০২-৫৬৬১১০১৮১, ০২-৫৮৬১০২৪৮, ০১৬১০৭১১৩০৭, ০১৬২৫৬৩৮৫০৮ এবং ০১৭২২৭৯৭৯৬৩।

পরীক্ষার ফি পরিশোধের পদ্ধতি
প্রথমবারের মত এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ হবে শিক্ষাবের্ডের তৈরি করা একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্ট কলেজ এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবকের সচল একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করবে। প্রতিষ্ঠান, বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেট করা থাকবে। পরীক্ষার্থীর কাছে কত টাকা পাওনা, কলেজ শুধু সফটওয়্যারে সেই টাকার পরিমাণ এন্ট্রি দেবে। তারপর পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকের নিবন্ধিত ফোন নম্বরে চলে যাবে একটি এসএমএস, যাতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকবে।

এছাড়াও একজন পরীক্ষার্থী চাইলে এসএমএসের মাধ্যমে তার নাম, রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কেন্দ্রের নাম, বোর্ড ও কেন্দ্র ফি এবং প্রতিষ্ঠানের পাওনার পরিমাণ জানতে পারবে।

ফরম পূরণের পর শিক্ষার্থী এসএমএসে টাকা পরিশোধ করার একটি লিংক পাবে। সেটি ব্যবহার করে অথবা সোনালী ব্যাংকের সোনালী ই-সেবা অ্যাপ ব্যবহার করে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার সর্বমোট ফি পরিশোধ করতে পারবে। এছাড়া বোর্ডের ওয়েবসাইটের স্টুডেন্ট প্যানেল থেকেও সোনালী সেবা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করা যাবে।

এছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ, বিকাশ, রকেট, ইউপে ও সোনালী ই-ওয়ালেট যে কোন একটির মাধ্যমে পরীক্ষার ফি দিতে পারবে। তাছাড়া যে কোনো ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডাচ বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস প্রভৃতি ব্যবহার করেও পরীক্ষার ফি দেওয়া যাবে। অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।

তবে টাকা পাঠানোর আগে প্রতিষ্ঠানের পাওনা এবং সার্ভিস চার্জসহ সর্বমোট টাকার ন্যূনতম অংক অ্যাকাউন্টে থাকতে হবে। টাকা পরিশোধ করার পর পরীক্ষার্থীকে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে একটি এসএমএসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। কারিগরি ত্রুটির কারণে পরীক্ষার্থী এসএমএস না পেলে বোর্ডের ওয়েবসাইটে স্টুডেন্ট প্যানেলে তার ফরম পূরণের স্ট্যাটাস দেখতে পারবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে।

পাওনা বা মোবাইল নম্বর এন্ট্রিতে ভুল ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পেমেন্ট না করা পর্যন্ত এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রতিষ্ঠান, পাওনা বা মোবাইল নম্বর সংশোধন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সংশোধন করার পর অবশ্যই পুনরায় সেন্ট এসএমএস বাটনে ক্লিক করতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষার্থী পেমেন্ট সম্পন্ন করলে আর সংশোধনের সুযোগ থাকবে না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে। তবে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট নিশ্চিত করেছে, তাদের নামের পাশে প্রতিষ্ঠান পেইড দেখাতে পারবে। বাকিগুলো পেন্ডিং দেখাবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান আনপেইড স্টুডেন্ট লিস্ট বাটনে ক্লিক করে ফরম পূরণের নির্ধারিত শেষ তারিখের পূর্বে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট করেনি, তা দেখাতে পারবে। যারা পেমেন্ট করেনি, ফোনে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফরম পূরণ করতে পারবে। ফরম চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখানে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নেওয়া প্রয়োজন নেই বলে বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে।