রূপপুর পারমাণবিককেন্দ্র থেকে ১৮ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে

রূপপুর পারমাণবিককেন্দ্র থেকে ১৮ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে

রূপপুর পারমাণবিককেন্দ্র থেকে ১৮ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে

পারমাণবিক তথ্য সেন্টারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, রসাটমের নিউক্লিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে চলমান প্রকল্পের বাস্তবতায় নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভা করা হয়েছে। 

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরএনপিপি) উৎপাদন শুরু করলে দেশের ১৮ লাখ পরিবার সহজ লভ্যে বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে দুই হাজার ৫শ’ জন দক্ষ এ  শেীয় জনবল কাজের সুবিধা পাবে। যদিও এখন প্রকল্প নির্মাণ কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় অর্ধ লাখ পরিবার জড়িত রয়েছে। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এক হাজার ৪শ’ ২৪ জনকে বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ  দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঈশ্বরদী পৌরসভার দ্বিতীয় তলায় পারমাণবিক তথ্য সেন্টারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, রসাটমের নিউক্লিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে চলমান প্রকল্পের বাস্তবতায় নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভা এসব তথ্য জানানো হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প (আরএনপিপি) নির্মাণ ঠিকাদার রাশিয়ার রসাটমের এটোমস্ট্রোয়একপোর্ট (এএসই) উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ ও রসাটমের নিউক্লিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা ও বিশ্বের অন্যান্য কয়েকটি দেশে চলমান তাদের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে তুলনামূলক বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়।

মতবিনিময়সভায় রাশিয়ান বিশেষজ্ঞরা বলেন, উৎপাদন শুরুর পর প্রকল্পের মূল চুল্লির মাত্র ৩০০ মিটারে পরই ফসল চাষাবাদ ও জনগণ বসবাস করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না। প্রকল্পের জন্য তাপমাত্রারও  কোনো পরিবর্তন হবে না। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরএনপিপির প্রকল্পের অনুরূপ অনেকগুলো প্রকল্পের কাজ রাশিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।

আরএনপিপি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত ২০২০ সালে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সর্বমোট ৫শ’ ৭৮ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮শ’ ৫০ জনকে রাশিয়ান  ফেডারেশনে এবং ৫৭৪ জনকে রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। একই সময় ২শ’ ৮৪ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ  শেষ করে ৭৫ জন এর মধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য রাশিয়ান সরকার প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ২০-৩০ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ বৃত্তির মাধ্যমে মস্কো ইঞ্জিনিয়ারিং ফিজিক্স ইনস্টিটিউট শিক্ষার সুযোগ প্রদান করছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিউক্লিয়ার সম্পর্কে শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে চুক্তি করা হয়েছে। যাতে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু করতে পারে।

আরএনপিপির ১২ শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে এবং একই উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্বাভাবিকভাবে ৬০ বছরের অধিক সময় ধরে উৎপাদন করবে। এরপর কিছু মেরামত কাজ সম্পন্ন করে এই কেন্দ্রের উৎপাদন আয়ুষ্কাল ১০০ বছর বাড়ানো সম্ভব হবে বলেও বিশেষজ্ঞা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ সময় আরএনপিপি নির্মাণ কাজের মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটোমস্ট্রোয়এক্সপোর্ট (এএসই) কমিউনিকেশনস ডিপার্টমেন্টের সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট নাতালিয়া গঞ্জারোভা, এএসই প্রধান বিশেষজ্ঞ কনস্টান্টিন  ফোকিন, এএসই বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি কনস্টান্টিন ফেটস, আলেক্সজান্ডার বাইবাকোভ এবং এনপিসিবিএল এর জনসংযোগ কর্মকর্তা কাজী মোঃ ইকবাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।