বান্দার তাকওয়াকে গুরুত্ব দেন আল্লাহ

বান্দার তাকওয়াকে গুরুত্ব দেন আল্লাহ

প্রতীকী ছবি

আল্লাহ বান্দার তাকওয়াকে গুরুত্ব দেন। মুমিন সৎ বান্দা আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। ইসলাম মুমিনদের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থাকার এবং সৎ জীবনযাপনের তাগিদ দিয়েছে। সৎ জীবনযাপনের কারণেই কেউ দুনিয়ার জীবনে গরিবি অবস্থার শিকার হলে তার জন্য পরকালের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। 

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘গরিব মুমিনরা ধনীদের ৫০০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। 

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবনকে আমাদের জন্য আদর্শস্বরূপ উপস্থাপন করেছেন। পার্থিব জিনিসের প্রতি অনাসক্তি, ধনসম্পদের ক্ষেত্রে নিজের তুলনায় অন্যকে প্রাধান্য দেওয়া, অভাবীদের মধ্যে সম্পদ বণ্টন করে দেওয়া, অল্পে তুষ্ট থাকা, সাদাসিধা জীবনযাপন করা তাঁর মহৎ গুণাবলির অন্যতম। 

তিনি ইরশাদ করেন, ‘মুসলমানের মধ্যে যারা দরিদ্র তারা মুসলমান ধনীর চেয়ে ৫০০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ তিনি আরও ইরশাদ করেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে দরিদ্রাবস্থায় রাখ, দরিদ্রাবস্থায় আমার মৃত্যু দাও এবং দরিদ্রদের সঙ্গে আমার হাশর করো’  (তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ)। 

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমি বেহেশতের মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম তার অধিকাংশই গরিব লোক। আর দোজখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার অধিকাংশ অধিবাসীই মহিলা’ (বুখারি, মুসলিম)। 

উসামাহ ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি জান্নাতের দুয়ারে দাঁড়িয়ে দেখতে পেলাম সেখানে অধিকাংশ গরিব লোক রয়েছে। আর ধনবানরা তখনো হিসাবের জন্য অবরুদ্ধ রয়েছে। অথচ দোজখিদের দোজখের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়ে গেছে’ (বুখারি, মুসলিম)। 

সাহাবি আরও বলেন, ‘সত্তরজন (আহলে সুফফাকে) এ অবস্থায় দেখেছি, তাদের কারও কাছে (গা ঢাকার) জন্য চাদর ছিল না, কারও কাছে লুঙ্গি ছিল এবং কারও কাছে চাদর (একসঙ্গে দুটি বস্ত্রই কারও কাছে ছিল না), তারা তা গর্দানে বেঁধে নিতেন। তারপর সেই বস্ত্র কারও পায়ের অর্ধগোছা পর্যন্ত হতো এবং কারও পায়ের গাঁট পর্যন্ত। সুতরাং তারা তা হাত দিয়ে জমা করে ধরে রাখতেন, যেন লজ্জাস্থান দেখা না যায়’ (বুখারি)। 

তিনি আরও বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফেরের জন্য জান্নাত’ (মুসলিম, তিরমিজি)।

আল্লাহর কাছে এ দুনিয়ার কোনো দাম নেই। এ ব্যাপারে সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যদি আল্লাহর কাছে মাছির ডানার সমান দুনিয়া (মূল্য বা ওজন) থাকত, তাহলে তিনি কোনো কাফেরকে তার (দুনিয়ার) এক ঢোক পানিও পান করাতেন না’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। 

আল্লাহ আমাদের দুনিয়ার জীবনের আসক্তি থেকে দূরে থাকার এবং সর্বাবস্থায় পরকালের কথা ভেবে নিজেকে প্রস্তুত করার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।