পাবনার সুজানগরে বিদ্রোহী ১০ প্রার্থীকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ

পাবনার সুজানগরে বিদ্রোহী  ১০ প্রার্থীকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ

পাবনার সুজানগরে বিদ্রোহী ১০ প্রার্থীকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাবনার সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়ি। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই উপজেলা কমিটির নেতা রয়েছেন। এসব প্রার্থী নিয়ে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বেকায়দায় পড়েছেন। তাই এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১০ নেতাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। রোববার (৩১ অক্টোবর) উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সঞ্চালনায় স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদের রোকন,আব্দুল জলিল বিশ্বাসসহ উপজেলা এবং ইউনিয়ন আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপজেলার দুলাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম শাহজাহানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, মানিকহাট ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী শফিউল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্বাস আলী মল্লিক, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী এস এম সামছুল আলমের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, হাটখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় উপজেলা আ.লীগের সদস্য আজাহার আলী  শেখ ও উপজেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আলী খান, সাগরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী শাহীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের সহ সভাপতি তৈয়ব আলী শেখ ও সদস্য টিপু সুলতান, রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী জিএম তৌফিকুল আলম পিযুষের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক টুটুল কাজীকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বহিষ্কার করার জন্য দলের হাইকমান্ড বরাবর সুপারিশ করা হয়।

সভায় একই সঙ্গে ভাঁয়না ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আমিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় স্থানীয় আ.লীগ কর্মী ওমর ফারুক, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী মশিউর রহমান খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিকা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী নূর মোহাম্মদ, তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী আব্দুল মতিন মৃধার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী আব্দুর রাজ্জাক খান এবং আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী কামাল হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ইউনিয়ন আ.লীগের কর্মী হিরার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে তারা যাতে দলীয়  কোন পদ পদবী না পেতে পারে সে সুপারিশও করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন আ.লীগের সব পদ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের সুপারিশ করার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুধু বিদ্রোহী প্রার্থীই নয়; উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলীয় যে সকল নেতাকর্মী বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেবে তদন্তে প্রমাণীত হলে তাদের বিরুদ্ধেও দলের গঠনতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী একই ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর সুজানগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আ.লীগ মনোনীত ১০ জন ,বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ২০ জনসহ সর্বমোট ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।