কলকাতা পুর নির্বাচনে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ

কলকাতা পুর নির্বাচনে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ

কলকাতা পুর নির্বাচনে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ

কলকাতায় পুর নির্বাচন ঘিরে অশান্তি, বোমাবাজি, এজেন্টদের মারধরের ঘটনা ঘটলো। তাছাড়া বুথ দখল, ছাপ্পাভোটের অভিযোগও উঠেছে।রোববার কলকাতা পুরসভার ভোটে বোমবাজির কথা পুলিশও স্বীকার করে নিয়েছে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বোমাবাজি হয়েছে। আর সবমিলিয়ে মোট ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুরভোট শুরু হওয়ার পর থেকেই একাধিক ওয়ার্ড থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে। কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠকের এজেন্টকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি জানিয়েছে, তাদের অনেক এজেন্টকে ভয় দেখানো হয়েছে। তাই তারা অনেক বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি। ব্রেবোর্ন রোডেও মারামারি হয়। খিদিরপুরে বাম প্রার্থী ফৈয়জ আহমেদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গাড়ির কাচ ভেঙে দেয়া হয়। ফৈয়াজ আহমেদ অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গেছে, বড়বাজারের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বুথ দখল করে নেয় দুষ্কৃতীরা। তারা বুথে ভাঙচুর করে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের কর্মীদের মারা হয়েছে। ইভিএম ভাঙা হয়। এমনকী টিভি ক্যামেরা ঢোকার আগে একটি বুথে ব্যাপকভাবে ছাপ্পা দেয়ার অভিযোগও উঠেছে।

বোমবাজিতে আহত তিন

টাকি স্কুলের সামনে বোমাবাজি হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, আরো কয়েকটি জায়গায় বোমাবাজি হয়েছে। তার মধ্যে বেলেঘাটায় খান্না স্কুলও আছে। সবমিলয়ে তিনজন আহত হয়েছেন।পুলিশের দাবি, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে তারা ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন। সকাল থেকে প্রচুর অভিযোগ পুলিশের কাছে এসেছে। তারা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ কর্মীদের পাঠিয়েছেন।

রাজ্যপাল ক্ষুব্ধ

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার দেহরক্ষীদের নিয়ে যেতে পারেননি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ ছিল, শুধুমাত্র জেড প্লাস নিরাপত্তা যিনি পান, তিনিই নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে বুথের ভিতর যেতে পারবেন। রাজ্যে কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। রাজ্যপাল পান না। তাই তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে বাইরে রেখেই ভোট দিতে ঢোকেন। তবে রাজ্যপালের ক্ষোভের কারণ, পুরভোটে অশান্তি নিয়ে।

অভিষেকের বক্তব্য

তৃণমূল নেতা ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তৃণমূল কর্মীরা বেনিয়ম করছেন, সেরকম কোনো ফুটেজ দেখাতে পারলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দল নেবে, প্রশাসনও নেবে।

অভিষেকের মতে, বিজেপি আসলে হারের যুক্তি সাজাচ্ছে। তাই তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিচ্ছে। নানা ধরনের অভিযোগ করে যাচ্ছে।তৃণমূল নেতাদের দাবি, যে সব জায়গায় ঝামেলা হয়েছে, তা বিরোধী দলের তরফে করা হয়েছে। তৃণমূল কোনো ঝামেলার মধ্যে নেই।

বাম-বিজেপি-কংগ্রেস বিক্ষোভ

পুরভোটে সহিংসতা ও বেনিয়ম নিয়ে বড়তলায় একসঙ্গে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস কর্মীরা। তাদের অভিযোগ ছিল, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বুথে রিগিং করছেন। প্রথমে বাম ও কংগ্রেস প্রার্থী এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তারপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিজেপি প্রার্থী ও কর্মীরা।ভোটের হার

বেলা একটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৮ শতাংশ। এটাকে খুব বেশি ভোটের হার বলা যাবে না। অভিষেকের বক্তব্য, ছুটির দিন বলে প্রথম দিকে ভোটের হার বেশি হয়নি। তবে বেলা বাড়লে ভোটের হারও বাড়বে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে