নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের

নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের

নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে চোখ টাইগারদের

প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত জয়ের পর উজ্জীবিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের চোখ এখন  ইতিহাস সৃস্টিতে। কারণ আগামীকাল থেকে  ক্রাইস্টচার্চের হাগলি ওভালে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ ম্যাচ জিতে নতুন করে ইতিহাস লিখতে চায়  টাইগাররা। 

টেস্টটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়। ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টস।
সিরিজের প্রথম টেস্টে ৮ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। যা ছিল  নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের প্রথম টেস্ট জয়। এমনকি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৩টি প্রচেষ্টায় প্রথম জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা।   

টেস্টের পাঁচ দিনই স্বাগতিকদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে খেলেছে বাংলাদেশ। এতে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ নিতে পারে টাইগাররা। দলের প্রধান দুই খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল ছাড়া এ জয়ে এটাই প্রমানিত হয়েছে  বড় ফর্মেটে টাইগারদের ভবিষ্যত নিরাপদ হাতে রয়েছে।

এই জয়ে দুই টেস্ট  সিরিজে বাংলাদেশ এখন সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে। পরের ম্যাচে ড্র করলেই বিদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের ছাড়া বড় কোন দেশের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে  বাংলাদেশ। দলগত পারফরমেন্সেই প্রথম টেস্ট জিতেছিলো টাইগাররা। যে কারণে এখন অনেক  আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ শিবির।  কিন্তু বড় ফরম্যাটে দীর্ঘদিন ভালো করতে না পারা এবাদত হোসেন এ ম্যাচে নিজের সেরাটা দিয়েছেন।

ইনিংসে ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। যা বাংলাদেশের পক্ষে পেসারদের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার। তবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পক্ষে পেসারদের সেরা পারফরমেন্স। এমন পারফরমেন্সের সুবাদে ৮ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ।
ক্রাইস্টচার্চের হাগলি ওভালে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। কারন এই ভেন্যুতে আট ম্যাচ খেলে মাত্র ১টি ম্যাচ হেরেছে কিউইরা।  ভেন্যুটি স্বাগতিকদের পয়মন্ত হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশের  প্রথম টেস্ট জেতা ভেন্যু মাউন্ট মাউঙ্গানুই  অপেক্ষাকৃত নতুন মাঠ ছিল, যেখানে এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি টেস্ট ম্যাচ আয়োজন হয়েছে। বিশেষ করে এবাদত হোসেন এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন।

নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটার রস টেলর জানান, বাংলাদেশের চেয়ে ক্রাইস্টচার্চের কন্ডিশন তাদের পক্ষেই থাকবে। 
টেলর বলেন, ‘দল এখানে যথেষ্ঠ ধৈর্য্য ধারনের চেস্টা করলেও বাংলাদেশে  চাপ সৃস্টি করেছে।  আমাদের অনেক খেলোয়া সম্ভবত তাদের ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় রিভার্স সুইংয়ের মুখোমুখি হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি সম্ভবত শুধুমাত্র ঘরোয়া ক্রিকেটে হয়েছে। পাশাপাশি তারাও খুব ভালো বোলিং করেছে। কিন্তু ক্রাইস্টচাচের কন্ডিশন আমাদের জন্য  অনেক বেশি সহায়ক হবে। যে সহায়তা সম্ভবত মাউন্ট মাউঙ্গানুইতে পেয়েছে বাংলাদেশ।’

এই ক্রিকেট মৌসুম শেষ হবার পরই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন টেলর। এই টেস্ট সিরিজের পর নিউজিল্যান্ড তাদের ক্রিকেট মৌসুম শেষ করতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও কিছু টি-টোয়েন্টি খেলবে। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টই টেইলরের শেষ ম্যাচ। নিঃসন্দেহে এটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাইবেন তিনি।

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা টেইলরের সতীর্থ ডেভন কনওয়ে বলেন, ‘একটি দল হিসেবে আমরা অবশ্যই  ঘুড়ে দাঁড়াতে চাই এবং জয় দিয়ে তাকে বিদায়  জানাতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার(টইলর) সাথে খেলাটা সত্যিকারার্থেই  সম্মানের ব্যাপার।  যদিও তার সাথে আমি মাত্র পাঁচটি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু ড্রেসিংরুমে টেইলরের পাশে থাকা, এটা সম্মানের ব্যাপার।

কনওয়ে বলেন, ‘গত সপ্তাহে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে খেলা শেষ হবার সাথে সাথে আমরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমাদের চেষ্টা করতে হবে এবং ঘুড়ে দাঁড়াতে হবে।  তার বিদায়টা স্মরণীয়  করতে হবে এবং টেস্ট ক্রিকেটে  তার অবদান  আমাদের মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।’

এ দিকে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে একটি পরিবর্তন আসছে। আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়ে দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তার পরিবর্তে টেস্ট অভিষেক হবে নাইম শেখের। 

বাংলাদেশ দল : মোমিনুল হক (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, ফজলে রাব্বি মাহমুদ, লিটন কুমার, নুরুল হাসান সোহান, ইয়াসির আলী রাব্বি, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহি, ইবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, শহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয় ও নাঈম শেখ। 

সূত্র: বাসস