ইনিংস ও ১১৭ রানে হারলো বাংলাদেশ

ইনিংস ও  ১১৭ রানে হারলো বাংলাদেশ

ইনিংস ও ১১৭ রানে হারলো বাংলাদেশ

স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের সাথে প্রথম টেস্টে স্বপ্নের মতো জয় পেলেও ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টে মাত্র তিন দিনে ইনিংস ও ১১৭ রানে হারল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের এক মাত্র প্রাপ্তি লিটন দাসের সেঞ্চুরি।

প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের করা ৬ উইকেট ৫২১ রান বাংলাদেশ দুই ইনিংস মিলেও করতে পারলো না। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১২৬ রানে অল আউট হয়ে ফলঅনে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন কুমার দাসের সেঞ্চুরির সুবাধে ২৭৮ রান তোলে বাংলাদেশ। যার ফলে ইনিংস ব্যবধান ও ১১৭ রানের লজ্জাজনক হারের মুখ দেখে বাংলাদেশ।

বাজেভাবে হারলেও সিরিজ ১-১ ড্র। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ ড্র করার কৃতিত্ব দেখালো বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা ডাবল সেঞ্চুরিয়ান কিউই অধিনায়ক টম লাথাম।

৩৯৫ রানে পিছিয়ে থেকে মঙ্গলবার সকালে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা প্রথম ইনিংসের মতো নয়। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও প্রচুর সাবধানি ছিলেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও নাঈম শেখ। প্রথম ৮ ওভারে রান আসে ১০।

প্রথম ঘণ্টা প্রায় নির্বিঘ্নে পার করে দিচ্ছিলেন দু’জন। তখনই বিপত্তি। কাইল জেমিসনের বলে উইকেটেপের পেছনে ক্যাচ দেন সাদমান (৪৮ বলে ২১)। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নেন ব্লান্ডেল।

এরপর শান্তর সঙ্গে গড়ে ওঠে নাঈমের জুটি। যদিও বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছেন ওয়াগনার ও জেমিসন। দলীয় ৭১ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। ওয়াগনারের শর্ট বলে পুল শট নিচে রাখতে পারেননি শান্ত, লং লেগে ক্যাচ নেন বোল্ট। শান্তর ক্যামিও থামে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ করে।

অধিনায়ক মুমিনুল হক প্রথম বলেই রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান অল্পের জন্য। এক বল পরই ক্যাচের মতো দেন শর্ট লেগে। তবে বিপদ আসেনি। নাঈম এক প্রান্ত আগলে রাখেন ধৈর্য নিয়ে। প্রথম বাউন্ডারি পান তিনি ২২তম ওভারে, ৬৩ বল খেলে। পরের ২৮ বলে কোনো রানই করতে পারেননি তিনি।

লাঞ্চের পর বিদায় নেন নাঈম শেখ। টিম সাউদির বলে তার ক্যাচ নেন টম ল্যাথাম। ৯৮ বল খেলে ২৪ রানে শেষ হয় ব্যাট হাতে নাঈমের অভিষেক পর্ব। দলীয় ১২৩ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। ওয়াগনারের বলে মুমিনুলের ক্যাচ নেন বিদায়ী টেস্ট খেলতে নামা রস টেইলর। ৬৩ বলে ৪টি চার ও ৩৭ রান করেন মুমিনুল। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা ইয়াসির আলী এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২ রান করে তিনিও ওয়াগনারের শিকার হন।

লিটন দাস এরপর সেশনের বাকিটা কাটিয়ে দেন নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে। গড়ে ওঠে দারুণ জুটি। লিটন খেলতে থাকেন বেশ স্বাচ্ছন্দে। ৬৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। আগাতে থাকেন সোহানও। দলীয় ২২৯ রানে ভাঙে এই জুটি। ৫৪ বলে ৩৬ রান করে মিচেলের বলে সাজঘরে ফেরেন সোহান। এই জুটিতে রান আসে সর্বোচ্চ ১০১ রান। বল ১০৫।

তবে মিরাজের সঙ্গে লিটন ছিলেন দুর্দান্ত। আশির ঘরে নিজের রান যাওয়ার পর লিটন আরো বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে পেয়ে যান টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। ৬৯ বলে ফিফটি করা লিটন শতক করতে খরচ করেন ১০৬ বল। সেঞ্চুরি করতে ১৪টি চারের সাথে তিনি হাঁকান একটি ছক্কাও।

সেঞ্চুরির পরপরই বদলে যায় চিত্র। জেমিসনের বলে এলবিডব্লিউ লিটন। আম্পায়ার তোলেন আঙুল। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি লিটন। ফিরতে হয় ১০২ রানে। ১১৪ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ১৪টি, ছক্কা একটি।

এরপর শরিফুল রানের খাতা খোলার আগে জেমিসনের শিকার। ইবাদতকে আউট করে বাংলাদেশের ইনিংসে ইতি টানেন রস টেইলর। বাংলাদেশ পায় ইনিংস হারের লজ্জা।

বল হাতে নিউজিল্যান্ডের হয়ে জেমিসন চারটি, ওয়াগনার তিনটি, সাউদি, মিচেল ও টেইলর পান একটি উইকেট।