পাবনায় তাপমাত্রা ১০.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, শীতের তীব্রতায় কাতরাচ্ছে পাবনাবাসী

পাবনায় তাপমাত্রা ১০.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, শীতের তীব্রতায় কাতরাচ্ছে পাবনাবাসী

ছবি- নিউজজোন বিডি

পাবনা প্রতিনিধি:বৃহস্পতিবার সকালে পাবনা শহরের বড়বাজার এলাকায় আবর্জনা জ্বালিয়ে দুই বয়স্ক ব্যক্তি শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে নিজেদেরকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করেন। 

বাংলা পৌষের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মাঘের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে পাবনা জেলায় হাড় কাঁপানো ঠান্ডা চলছে। দেশের উত্তাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গত চার দিন ধরে জেলাজুড়ে বইছে হিমেল হাওয়া।

পারদ নামতে শুরু করলেই ফিরে এসেছে শীতের ছবি। পাবনা শহরে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন মানুষ।

সকাল-সন্ধ্যা, শীতের পোশাকেও মানুষ কাঁপছে। সন্ধ্যায় শহরে পোড়া কাগজের আগুনে হাত গরম করতে দেখা যায় লোকজনকে। রাত বাড়ার সাথে সাথে রাস্তায় নেমে আসে ঘন কুয়াশা। গত তিন দিনে পাবনায় এমন চিত্র।

গত কয়েকদিন ধরেই শীতের কামড়ের মুখে মানুষ।

পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের পর্যবেক্ষণ মোঃ নাজমুল হক জানান,‘রাজশাহী বিভাগ তথা উত্তরাঞ্চলের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে এ পর্যবেক্ষণ জানান, আগামী আরো কয়েকদিন তাপমাত্রা নিচে নেমে যাবে এবং শীতৈর তীব্রতা আরো বাড়বে।’

গত রাতে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর আজ (বুধবার) তা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রী  সেলসিয়াসে নেমে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রচন্ড ঠঅন্ড বাতাস বাতাস বয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা।

শীতবস্ত্র ও খাবারের সংকটে হাজার হাজার দরিদ্র মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। জেলাজুড়ে এক সপ্তাহ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন তারা।

তাপমাত্রার পারদ দিন দিন কমতে থাকায় পাবনা ফুটপাতের মার্কেটগুলোতে বাড়ছে শীতবস্ত্রের বিক্রি।

শীত থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে পোশাক কিনছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। গরম কাপড় কেনা-বেচা হচ্ছে গভীর রাত পর্যন্ত।

পাবনা হকার্স মার্কেটগুলোতে ও সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় শীতবস্ত্রের বিক্রেতারা বেশি বসেছে। সারাদিনই  দোকানে ক্রেতাদের ভিড়।

পুরাতন ও নতুন সোয়েটার, জ্যাকেট, শার্ট ও ট্রাউজারসহ কাপড়ের দোকানে গরম কাপড়ের সরবরাহ বাড়ছে। ফুটপাতের দোকানগুলো এখন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত থাকে। ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতের কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।

ছাত্র আজিজুর রহমান বলেন, "গত তিন দিন ধরে শীত পড়ছে। সকাল থেকে গরম কাপড়, টাইটস, মাফলার পরে বিছানা থেকে উঠছেন। বেশ ঠান্ডা, তবে টিউটরদের জন্য ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।" '

শীত ও কুয়াশার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের। সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত  রোগের প্রকোপ বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের উপার্জনেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

হঠাৎ করে আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তীব্র শীতের কারণে মানুষ ঘর  থেকে বের হতে পারছে না।

ব্যবসা-বাণিজ্যসহ মানুষের দৈনন্দিন কাজে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। গরিব মানুষ কাজে যেতে পারছে না। দরিদ্র, অসহায়, প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। তীব্র শীত সত্তেও পাবনায় সরকারি-বেসরকারিভাবে  শীতবস্ত্র বিতরণ লক্ষ্যণীয় নয়।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে শীতে শিশুরা ভুগছে। তারা নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কাইটিস, জ্বর, সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে বলে পরিসংখ্যান বিভাগ জানান।