ইউক্রেন উত্তেজনা নিয়ে রুশ-মার্কিন জরুরি বৈঠক

ইউক্রেন উত্তেজনা নিয়ে রুশ-মার্কিন জরুরি বৈঠক

ফাইল ছবি

রুশ সৈন্যরা যেকোনো সময়ে আক্রমণের উদ্দেশ্যে ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে পড়তে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেছেন।

আজ শুক্রবার জেনেভায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাবরভের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিনকেনের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মি. ব্লিনকেন তার উদ্বোধনী মন্তব্যে বলেন, "এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মূহুর্ত। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও শান্তির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"

রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র "আশা করে না আমাদের মধ্যে যে পার্থক্য এখানেই তার সমাধান হয়ে যাবে," বলেন তিনি।

তবে তিনি বলেন, কূটনীতির মাধ্যমে এই অবস্থা কাটানো যায় কি না সেটা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন হয়তো সেটা সম্ভব হতে পারে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাবরভ বলেন, এই আলোচনায় বড় ধরনের কোন অগ্রগতি হবে বলে রাশিয়া আশা করেনি।

বৈঠক শেষে তারা দু'জনেই এই আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।

কেন এই উত্তেজনা

ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া তাদের এক লাখ সৈন্য জড়ো করেছে। তবে আক্রমণের উদ্দেশ্যে রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে পড়তে পারে- এধরনের পরিকল্পনার কথা তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বৈঠকে মি. ব্লিনকেন সতর্ক করে দেন রাশিয়া যদি এধরনের কিছু করে তাহলে তারা "ঐক্যবদ্ধ, দ্রুত এবং বড় ধরনের ব্যবস্থা" গ্রহণ করবেন।

বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে মি. লাবরভ পশ্চিমা প্রতিরক্ষা জোট নেটোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে এই জোট রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করছে।

এর আগে রাশিয়ার নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যাতে প্রতিরক্ষা জোট নেটোতে যোগ দিতে না পারে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি চান পূর্ব ইউরোপে পশ্চিমা এই প্রতিরক্ষা জোটের সামরিক তৎপরতাসহ সেখানে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা হোক। এই পূর্ব ইউরোপকে মস্কো তার নিজের ঘরের পাশের প্রভাব-বলয় বলে মনে করে।

রাশিয়া যখন ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে নিজের সীমানায় ঢুকিয়েছে, তারপর থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে লড়তে হচ্ছে নিজের দেশেই রুশ সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীদের সঙ্গে।

এই সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার শীর্ষ দুই কূটনীতিকের মধ্যে জেনেভায় এই বৈঠক হয়েছে দ্বিতীয়বারের মতো।

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. ব্লিনকেন মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে তার মিত্রদের সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করেছেন।

বৃহস্পতিবার বার্লিনে তিনি এবিষয়ে ব্রিটিশ, ফরাসি এবং জার্মান কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বলেছেন, মি. ব্লিনকেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উত্তেজনা কিছুটা কমিয়ে আনার জন্য একটা কূটনৈতিক সুযোগ দেবেন।

মাত্র গতকালই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালাবে বলেই তার ধারণা, তবে যদি রুশ অভিযান ছোট খাট আকারে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জবাবও মৃদু হবে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই কথায় অবশ্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোডিমির জেলেনস্কি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

সূত্র: বিবিসি