চট্টগ্রাম বই মেলায় ইসলামি বই বিক্রি নিয়ে কেন বিতর্ক

চট্টগ্রাম বই মেলায় ইসলামি বই বিক্রি নিয়ে কেন বিতর্ক

চট্টগ্রাম বই মেলায় ইসলামি বই বিক্রি নিয়ে কেন বিতর্ক

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একুশে বই মেলায় ইসলামি বই বিক্রি নিয়ে এক বিতর্কের পর এই মেলা বর্জনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

কিছু প্রকাশনা সংস্থার অভিযোগ, ইসলামি বইয়ের প্রকাশক বলে তাদেরকে মেলায় স্টল বরাদ্দ করা হয়নি। কিন্তু মেলার আয়োজকরা বলছেন, সেখানে ইসলামি বই বিক্রি নিয়ে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যেসব বইয়ের বিষয়বস্তুতে সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু থাকবে সেসব বইয়ের প্রকাশকদের স্টল বরাদ্দ দেয়া হবে না।

এদিকে ইসলামি বই প্রকাশ করে এমন কিছু প্রকাশনা সংস্থা বলছে তারা শুধু মাত্র ইসলাম এবং সাহাবীদের নিয়ে বই প্রকাশ করে, কিন্তু তারপরও মেলায় স্টল বরাদ্দ পায় নি।বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অমর একুশের বই মেলার উদ্বোধন হয়েছে রবিবার ২০শে ফেব্রুয়ারি।কিন্তু এর আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বইমেলা বর্জনের জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

নানা পোস্ট এবং ভিডিওতে অভিযোগ করা হচ্ছে এই বইমেলায় ইসলামি বই এর স্টল বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না।বিষয়টা জানতে বইমেলার আয়োজক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বইমেলা আয়োজন কমিটি সঙ্গে কথা বললে তারা বলেছেন যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটার কোন ভিত্তি নেই।

বইমেলা আয়োজকরা কি বলছেন?

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বই মেলা আয়োজন কমিটি এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহ আলম বলছেন বইমেলায় ইসলামি বই প্রকাশের কোন বাধা নেই।

মি. আলম বলেন যেসব "বই এ জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ বা উস্কানি মূলক কন্টেন্ট রয়েছে সেসব বই মেলায় পাবলিশ না করার জন্য বলা হয়েছে"।তিনি বলেন এবারের বই মেলার ১২১টি স্টল রয়েছে। ২২টি প্রকাশনা সংস্থার আবেদন বাতিল করা হয়েছে। মি. আলম বলেন "এই ২২টির সবগুলোই যে ইসলামি বই প্রকাশ করছে তা নায়। বইমেলার বিধিমালা না মানায় আমারা অনেকের আবেদন নেইনি।"

২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বইমেলার জন্য যে বিধিমালা তৈরি করা হয় সেটা মেনে বই মেলায় আবেদন করতে হয়।বইমেলা আয়োজন কমিটি বলছে যারা পে-অর্ডার করেন নি, যাদের প্রকাশনার মান ভাল না বা বছরে পাঁচটা বই প্রকাশ করেছে এমন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে তারা অনুমতি দেন নি।

কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা কি অভিযোগকারীরা মানছেন?

'বয়কট চট্টগ্রাম বইমেলা' নাম দিয়ে ফেসবুকে অনেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন।তাদের মধ্যে একটা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কালান্তর প্রকাশনী।এই প্রকাশনা সংস্থার ব্যবস্থাপক আবদুল ওয়াদুদ মাহদী বলেন গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের নেতৃত্বে সাতটি প্রকাশনা সংস্থা আবেদন করেন, কিন্তু তাদের আবেদন গ্রহণ করা হয় নি।মি. মাহদী বলেন " আমরা ইসলাম, কোরআন এবং সাহাবীদের জীবন নিয়ে বই প্রকাশ করি। কিন্তু আমাদের বই মেলায় বই এর স্টল বরাদ্দ দেয়া হয় নি। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাই।"

কিভাবে বই বাছাই করা হচ্ছে?

চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহ আলম বলেন তাদের ১০ সদস্যের একটি কমিটি আছে।এই কমিটিতে লেখক, সাংবাদিক এবং সিটি কর্পোরেশনের লোক রয়েছেন। কোন প্রকাশনা সংস্থা কী ধরণের বই প্রকাশ করছে বা কোন বইয়ে মৌলবাদ বা জঙ্গিবাদকে উস্কে দেয় এমন কোন কিছু আছে কীনা, সেটা তাই দেখেন। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মেলা পরিদর্শন করেন।তিনি আরও বলেন, "এই ধরণের বই যদি বাইরে বিক্রি হয় সেক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই , কিন্তু মেলার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য তারা সতর্ক আছেন।"

সূত্র : বিবিসি