নেটো ও রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত মানেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ : বাইডেন

নেটো ও রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত মানেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ : বাইডেন

নেটো ও রাশিয়ার সরাসরি সংঘাত মানেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ : বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে সৈন্য পাঠাবে না আমেরিকা''আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, নেটোর সমস্ত শক্তি দিয়ে ও দ্রুততার সাথে আমরা নেটোর প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করবো,'' টুইটারে লিখেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

''কিন্তু ইউক্রেনে আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াবো না। নেটো এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি সরাসরি সংঘাত মানেই হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করা,'' তিনি বলেছেন।

জো বাইডেন এর আগেও অনেকবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর কোন সম্ভাবনাই নেই।সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার ঘনিষ্ঠদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে বাইডেন প্রশাসন।

যুদ্ধের ১৭তম দিনে যা ঘটেছে

২৪শে ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে তিন দিক থেকে হামলা শুরুর পর রাশিয়ার সৈন্যরা এখন আস্তে আস্তে রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলছে। স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কিয়েভের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে আবার অগ্রসর হতে শুরু করেছে রাশিয়ার বাহিনী।

এর আগে কিয়েভ অভিমুখে যে লম্বা রুশ গাড়ি বহর স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গিয়েছিল, সেটি আবার কিয়েভ শহরের প্রান্তে সংঘবদ্ধ হতে শুরু করেছে বলে এখন দেখা যাচ্ছে।সুমি শহর থেকেও রাশিয়া একটি বহর কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে।

প্রতিরক্ষা বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের ড. জ্যাক ওয়াটলিং ধারণা করছেন, রাশিয়ার সৈন্যদের কর্মকাণ্ড থেকে মনে হচ্ছে, রাশিয়ার সৈন্যরা কিয়েভে পুরাদস্তুর হামলার পরিবর্তে বরং শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর দানিপ্রোর ওপর হামলা শুরু করেছে রাশিয়ান বাহিনী। যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম শহরটির ওপর রাশিয়া হামলা শুরু করলো। ভারী শিল্পের জন্য বিখ্যাত এই শহরটিতে রকেট ফ্যাক্টরি রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে রুশ সৈন্যদের যাতায়াতের জন্যও কৌশলগত ভাবে শহরটি গুরুত্বপূর্ণ।লুৎস্ক এবং ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক শহর দুটির ওপর সারারাত ধরে বোমাবর্ষণ করে রাশিয়া।দক্ষিণের শহর মারিউপোল এখনো অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়ার সৈন্যরা।

তবে উত্তরাঞ্চলে রাশিয়ার সৈন্যদের গতি কমে গেছে। বেলারুশ থেকে আসা রাশিয়ার সৈন্যদের বিশাল বহর চেরনোবিল হয়ে দানিয়েপার নদীর ওপর দিয়ে কিয়েভের দিকে আসছিল, তার গতি অনেক কমে গেছে। বহরটিতে জ্বালানি তেলের সংকট রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।সেখানে চেরনিহিভ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়ান বাহিনী।

উত্তরে গতি কমলেও দক্ষিণ এলাকায় দ্রুত অগ্রগতি পাচ্ছে রাশিয়ার সৈন্যরা। মারিউপোল ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা, শহরটিতে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ আটকে পড়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, মারিউপোল, খারকিভ, মালিতোপোলসহ অনেক শহরে ''ব্যাপকভাবে সহায়তা দরকার। বিশেষ করে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সরবরাহ জরুরি ভিত্তিতে দরকার।''এসব শহরে আটকে পড়া মানুষজন খাবার, পানি এবং বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছে।

পঁচিশ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছে

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর দেশটি থেকে ২৫ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম ইউরোপে এতো দ্রুত শরণার্থী বাড়তে শুরু করেছে।ইউনিসেফ ধারণা করছে, এই শরণার্থীর অর্ধেকই শিশু-কিশোর।

সূত্র : বিবিসি