বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক: রাষ্ট্রপতি

বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির চিরন্তন প্রেরণার উৎস এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক। বাংলাদেশকে জানতে হলে বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৭ মার্চ একটি স্মরণীয় দিন। ১৯২০ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি জাতির পিতার ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মহান এ নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা কেটেছে গ্রামের কাদা-জল, মেঠোপথ আর প্রকৃতির খোলামেলা পরিবেশে। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদী কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। পরোপকার আর অন্যের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে সবসময় তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেকে জড়িয়ে নিতেন। জীবনের প্রতিটি ক্ষণে যেখানেই অন্যায়-অবিচার, শোষণ-নির্যাতন দেখেছেন, সেখানেই প্রতিবাদে নেমে পড়েছেন।

আবদুল হামিদ বলেন, মাত্র ১৪ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু ব্রিটিশবিরোধী সভা-সমাবেশে অংশ নেন। তিনি গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে ‘মুসলিম সেবা সমিতি’ পরিচালনা করেন। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাঙালির আবেগ ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক। একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ। এ ভাষণে বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীনতার ডাকই দেননি বরং মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখা ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালালে ২৬ মার্চ ১৯৭১ জাতির পিতা ঘোষণা করেন, বাঙালি জাতির বহুকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি অবস্থায় শাসকগোষ্ঠী তাকে প্রহসনমূলকভাবে ফাঁসির হুকুম দিয়েছিল। স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতা ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠনেও তিনি সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি।