রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলবে না : অর্থমন্ত্রী

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলবে না : অর্থমন্ত্রী

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দেশের অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলবে না : অর্থমন্ত্রী

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়লেও, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এই মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সামরিক সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফলাফল কী হবে তা নির্ভর করবে এ যুদ্ধ ও তার ফলে উদ্ভূত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর।

সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ঢাকা-১০ আসনের শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ দাবি করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, `আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়লেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহুর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না।'

ইউক্রেনে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযান ও এর পাশাপাশি রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ বেলারুশের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। বলেন, এই সংকটে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। রাশিয়া ইউক্রেন সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, `চলমান সামরিক সংকট ও নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, সার, গম, নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রিক পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিনিশ গুডসের মূল্য আবশ্যিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। এই মূল্যবৃদ্ধি নিশ্চিতভাবে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি করবে। তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়ে দেশে মূল্যস্ফীতির চার অনুভূত হতে পারে।'এই সংকট রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্থ পরিশোধ নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে মন্ত্রী জানান।

সরকার দলীয় সাংসদ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, `চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বিদেশ হতে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।'

জাতীয় পার্টির সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০২০-২১ অর্থ বছরে করোনা ভাইরাসের কারণে তা কমে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, `করোনা প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যায়ের মধ্যে পড়েনি। বরং মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।'

ঢাকা-১৮ আসনের মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহের সঙ্গে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসাবে দুই হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে বর্তমান ও আগের চুক্তি হতে দুই হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় হয়েছে।