তাজমহলকে রাজপরিবারের সম্পত্তি বলে দাবি বিজেপি এমপির

তাজমহলকে রাজপরিবারের সম্পত্তি বলে দাবি বিজেপি এমপির

তাজমহলকে রাজপরিবারের সম্পত্তি বলে দাবি বিজেপি এমপির

তাজমহল আবার বিতর্কের কেন্দ্রে। ভারতের জস্থানের রাজসামন্দ থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ ও জয়পুর রাজপরিবারের সদস্য দিয়া কুমারী দাবি করেছেন, ''সম্রাট শাহজাহান জয়পুর রাজপরিবারের জমি দখল করে তাজমহল তৈরি করেছিলেন।''

দিয়ার বক্তব্য, ''সেই সময় মুঘল-রাজ ছিল। আজ সরকার যদি কারো জমি অধিগ্রহণ করে, তাহলে তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়। কিন্তু আমি শুনেছি, সেসময় আমাদের জমি নেয়ার পরেও কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। তখন তো এমন কোনো আইন ছিল না যে, আমরা আবেদন জানাতে পারি। তাজের জমি নিঃসন্দেহে জয়পুরের রাজপরিবারের জমি।''

দিয়া বলেছেন, ঐতিহাসিকভাবে তাজমহল জয়পুর রাজপরিবারের জমিতে হয়েছে। তার কাছে এর প্রমাণ আছে। তিনি বলেছেন, কেউ যদি আদালতে মামলা করেন, তখন যদি কোনো তথ্যপ্রমাণ পেশ করার দরকার হয়, তিনি তা করবেন।

দিয়া কুমারীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাজমহলের আগে সেখানে কি কোনো মন্দির ছিল? তার জবাব, ''আমি নথিপত্র অতটা খুঁটিয়ে পড়িনি। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, ওই জমিটা রাজপরিবারের।''

হাইকোর্টে মামলা

উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করেছেন অযোধ্যায় বিজেপি-র মিডিয়া প্রধান রজনীশ সিং। তার দাবি, তাজমহলের ইতিহাস নিয়ে আদালত একটা ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং টিম গঠন করুক। সেই সঙ্গে তাজমহলের ২২টি বন্ধ কক্ষও খুলে দেখা হোক, সেখানে কী আছে।

সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে রজনীশ জানিয়েছেন, ''আবেদনে আমি বলেছি, তাজমহলের ২২টি ঘরের দরজা খোলা হোক। তাহলে সত্য প্রকাশ পাবে।'' দক্ষিণপন্থি অনেক সংগঠন দাবি করে, তাজমহলের আগে সেখানে ভগবান শিবের মন্দির ছিল।

বৃহস্পতিবার এই আবেদনের শুনানি হয়। আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, তাজমহল সম্পর্কে জানার অধিকার দেশের আছে। কিন্তু বিচারপতি জানিয়ে দেন, তিনি জানতে পেরেছেন, নিরাপত্তার কারণে তাজমহলের কিছু ঘর বন্ধ করে রাখা আছে। বিচারপতি বলেন, আদালত এই আবেদন নিয়ে কী রায় দেবে? এখানে আবেদনকারীর অধিকারের প্রশ্ন আসছে কী করে? এরপর তো বিচারপতিদের চেম্বারে ঢোকা নিয়েও আবেদন জানানো হবে। 

জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে

কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরেই রয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদ। বারাণসীর আদালতে পাঁচজন হিন্দু নারী গত মে মাসে আবেদন জানান, মসজিদের পশ্চিম দেওয়ালের পিছনে হিন্দু মন্দিরে তাদের প্রতিদিন পুজোর অনুমতি দিতে হবে। এখন বছরে একদিন সেখানে পুজোর অনুমতি দেয়া হয়। ওই নারীরা তাদের আবেদনে বলেছেন, পুরনো মন্দির চত্বরে দৃশ্য ও অদৃশ্য দেবতাদের পুজো করতে দিতে হবে।

গত এপ্রিলে আদালত ওই চত্বর ইন্সপেকশন করে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেয়। গত শুক্রবার সেই কাজ শুরু হয়। কিন্তু মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, মসজিদের ভিতরে কোনো ভিডিও তোলা যাবে না। আদালত এবার এই বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবে। মসজিদের তরফে আইনজীবী অভয় নাথ যাদব এনডিটিভি-তে বলেছেন, ''কোর্ট নিযুক্ত কমিশনার পক্ষপাতমূলক ব্যবহার করেছেন। আদালত মসজিদের ভিতরে ঢোকার কোনো নির্দেশ দেয়নি। তা সত্ত্বেও তিনি ঢুকে ভিডিও করতে চেয়েছিলেন।''

আদালত রায়ে জানিয়েছে, কোর্ট নিযুক্ত কমিশনারকে বদলানো হবে না। তবে আদালত আরো একজন কমিশনার নিয়োগ করেছে। আদালত জানিয়েছে, আবার সমীক্ষা করা হবে। ১৭ মে-র আগে এই সমীক্ষা করতে হবে। জ্ঞানবাপীর সব জায়গায় সমীক্ষা হবে। মসজিদের ভিতরেও হবে।  কেউ যেন সমীক্ষার কাজে বাধা না দেয়। বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিচারক জানিয়েছেন।  

সূত্র  :  ডয়চে ভেলে