প্রধানমন্ত্রীর সাথে ইইউ’র রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে জাতীয় সংসদ ভবনে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে আরো উন্নত ও বৈচিত্র্যময় করার জন্য রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলির প্রতিশ্রুতি এবং প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত পরিদর্শনকালে স্বেচ্ছাসেবক, দলীয় কর্মী ও সরকারি সংস্থা, যারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন তাদের সাথে আলোচনা সভা করেন।
ইইউ রাষ্ট্রদূত প্রধানত মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট এই ধরনের মৌসুমী প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সহনশীলতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। দুর্যোগ প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও উত্তরাঞ্চলে বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, নদীমাতৃক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নদী ভাঙ্গন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সেই লক্ষ্যে, তিনি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ তার দৃষ্টিভঙ্গি সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।
এ সময় তিনি গত সাড়ে ১৩ বছরে তার সরকারের আমলে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ অবশেষে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরন লাভ করবে।
ইইউ দেশগুলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি এভরিথিং-বাট-আর্মস (ইবিএ) ইনিশিয়েটিভ আকারে ইইউ-এর অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকারের প্রশংসা করেন। তিনি বাণিজ্য-সম্পর্কিত বিষয়ে ইইউ-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য তার সরকারের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে, রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সবুজ গার্মেন্টস শিল্পের প্রশংসা করেন। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের সাবলীল উত্তরণ কামনা করেন। তিনি আশ্বাস দেন যে, ইইউর নতুন জিএসপি রেগুলেশন ইতোমধ্যে ২০২৯ সাল পর্যন্ত জিএসপি+ সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বিষয়টি বিবেচনা করছে।
শেখ হাসিনা বলেন যে, তিনি ২০২৯ এর পরেও ইইউ-এর অব্যাহত সমর্থন পাওয়ার জন্য আশাবাদী।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের প্রধান কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন।
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, ইইউ বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনে সহায়তা করছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই লক্ষ্যে, তারা শিগগিরই এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য কিছু বাস্তব পন্থা খুঁজছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর ক্যাম্প এলাকা আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। স্থানীয় জনগণের দ্বারা এই অঞ্চলকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে তার সরকারের।
পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, উদ্বোধনের পর এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তিনি আরো বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিঃসন্দেহে খুব বেশি হবে। কারণ, এই জেলাগুলো ব্যাপক শিল্পায়নের কেন্দ্র হয়ে ওঠবে। যার জন্য আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বন্দর সুবিধা নির্মাণের প্রয়োজন হবে।
এ লক্ষ্যে, ইইউ প্রধান প্রতিনিধিদল অন্যান্য দেশের তুলনায় বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশের কর ব্যবস্থার প্রশংসা করেন।
সূত্র : বাসস