দানিয়ুবে ভেসে উঠেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জার্মান জাহাজ

দানিয়ুবে ভেসে উঠেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জার্মান জাহাজ

সংগৃহীত

সার্বিয়ার প্রাহোভোর শহরের কাছে দানিয়ুব নদীতে ভেসে উঠেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জার্মান যুদ্ধজাহাজ। প্রবল খরায় পানির স্তর কমে যাওয়ায় এক সময়ে ডুবে যাওয়া একাধিক যুদ্ধজাহাজের অংশ চোখে পড়েছে।

ভয়াবহ খরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দানিয়ুব। এটি ইউরোপের খরস্রোতা নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম। গত ১০০ বছরের মধ্যে এ নদীর পানির স্তর চলতি বছর সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। খরার ফলে পানির স্তর নেমে সার্বিয়ার বন্দর নগরী প্রাহোভোর কাছে দানিয়ুবের বুকে বিস্ফোরকবোঝাই কয়েক ডজন জার্মান যুদ্ধজাহাজের দেখা মিলেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেগুলো ডুবে গিয়েছিল।

১৯৪৪ সালে দানিয়ুবে ভেসে যাওয়া নাৎসি জার্মানির শত শত জাহাজগুলির মধ্যে এগুলোও ছিল। সোভিয়েত বাহিনী অগ্রসর হওয়ার পর তারা কৃষ্ণসাগর থেকে পিছু হটে। এখনো পানির স্তর কম থাকলে এই জাহাজের অংশগুলোর কারণে নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

পূর্ব সার্বিয়ার প্রাহোভোর কাছে দানিয়ুবের একটি অংশে ২০টির বেশি জাহাজের অংশ দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে অনেক জাহাজে বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক মজুত রয়েছে। ফলে নৌযান চলাচলে বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছ।

জার্মান জাহাজ নিয়ে একটি বই লিখেছেন প্রাহোভোর ৭৪ বছর বয়সী ভেলিমির ট্রাজিলোভিক। তিনি বলেন, ‘জার্মানির এই জাহাজগুলো পরিবেশের বড় বিপর্যয় তৈরি করে গিয়েছে যা প্রাহোভোর মানুষের জন্য হুমকি।

জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সসহ ইউরোপের অন্যান্য অংশে মাসের পর মাস খরা এবং রেকর্ড পরিমাণে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে নদীর পানি শুকিয়ে নাব্যতা কমতে শুরু করেছে। ফলে যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সার্বিয়া কর্তৃপক্ষ দানিয়ুবের নৌযান চলাচল সচল রাখতে পলি অপসারণ ও নৌপথ খননকাজ শুরু করেছেন।

কয়েকটি জাহাজ প্রাহোভোতে দানিয়ুবের এই প্রসারিত অংশকে ১০০ থেকে ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট) পর্যন্ত সংকুচিত করেছে। নদীর তীরে ছড়িয়ে থাকা কিছু জাহাজে এখনো বুরুজ, কমান্ড ব্রিজ, ভাঙা মাস্তুল ইত্যাদি জিনিস অক্ষত রয়েছে। তবে বেশিরভাগ জাহাজই বালিতে ডুবে রয়েছে।

মার্চ মাসে সার্বিয়ান সরকার এই জাহাজগুলি উদ্ধার করে গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক অপসারণের জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করেছিল। যার খরচ আনুমানিক দুই কোটি ৯০ লাখ ইউরো। এদিকে খরার কারণে নদীর পানিস্তর শুকিয়ে যে জাহাজগুলি চোখে পড়ছে, সেগুলি নিয়ে শঙ্কাও বাড়ছে।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে, রয়টার্স