প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর : অগ্রাধিকার পাবে যে বিষয়গুলো

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর : অগ্রাধিকার পাবে যে বিষয়গুলো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে দুই দেশের পানি ব্যবস্থাপনা, প্রতিরক্ষা, রেলপথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচারসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আগামী সোমবার রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে হায়দারাবাদ হাউসে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। সেখানে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচাররোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাবে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন সঙ্কট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এই সফরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেন না দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশ চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য বর্ধিত সহযোগিতা চায়।

এর আগে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে ভারত সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং বোঝাপড়াসহ বহুমুখী সম্পর্ক স্থাপিত হবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সফরে প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন, যেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী মো: নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহেদ ফারুক রয়েছেন।

বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও হাসিনার সঙ্গী হবেন। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সফরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ার সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। হায়দারাবাদ হাউসে তিনি মোদির সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় মিলিত হবেন। পরে সেখানে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা যোগ দেবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এছাড়াও শেখ হাসিনা আজমীর শরীফ পরিদর্শনেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

সফরে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষই উচ্চ পর্যায়ের এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্পৃক্ততা বজায় রেখেছে।
সূত্র : ইউএনবি