ভারত-আফগানিস্তানকে বিদায় করে শ্রীলংকাকে নিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান

ভারত-আফগানিস্তানকে বিদায় করে শ্রীলংকাকে নিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান

সংগৃহীত

হাতে শেষ উইকেট নিয়ে ইনিংসের শেষ ওভারে জিততে ১১ রান দরকার পাকিস্তানের। এমন অবস্থায় শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে দুই ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে অবিস্মরণীয় জয়ে এশিয়া কাপের  ফাইনালে তুললেন দশ নম্বরে ব্যাট হাতে নামা নাসিম শাহ।

নাসিমের এই দুই ছক্কায় আজ এশিয়া কাপে সুপার ফোরের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তান ১ উইকেটে হারিয়েছে

আফগানিস্তানকে। এই জয়ে আফগানিস্তান ও ভারতকে বিদায় করে শ্রীলংকাকে নিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করলো পাকিস্তান।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে পাকিস্তান। ব্যাট হাতে সাবধানী শুরু আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও হজরতুল্লাহ জাজাইর। প্রথম ১০ বলে ৮ রান আসে। তবে দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ হাসনাইনের ১১ ও ১২তম বলে দু’টি ছক্কা মারেন গুরবাজ।

এরপর পরের দুই ওভারে জাজাইর ব্যাট থেকে আসে ৩টি চার। তবে চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে গুরবাজকে শিকার করে পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার হারিস রউফ। ১১ বলে ২টি ছক্কায় ১৭ রান করেন গুরবাজ। দলীয় ৩৬ রানে আফগানদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে।

সতীর্থ গুরবাজকে হারানোর পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাজাইও। হাসানাইনের বলে ব্যক্তিগত ২১ রানে আউট হন তিনি। ১৭ বলে ৪টি চার মারেন তিনি।
৪৩ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর আফগানিস্তানের রানে গতি কমে যায়। তৃতীয় উইকেটে ৩৯ বলে ৩৫ রান তুলেন করিম জানাত ও ইব্রাহিম জাদরান। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে জানাতকে ব্যক্তিগত ১৫ রানে থামান পাকিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নাওয়াজ।

জানাতের আউটের পর ১৩ রানের ব্যবধানে দ্রুত ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ১৭তম ওভারে দলীয় ১০৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানরা। ফলে বড় স্কোরের পথ সেখানেই শেষ হয়ে যায় তাদের। এসময় নাজিবুল্লাহ জাদরান ১০, অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি শূন্য ও ইব্রাহিম ৩৫ রান করে আউট হন।

সপ্তম উইকেটে ২১ বলে অবিচ্ছিন্ন ২৫ রান তুলে আফগানিস্তানকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও রশিদ খান। ওমারজাই ১০ বলে ১০ ও রশিদ ১৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮ রান করেন। পাকিস্তানের রউফ ২৬ রানে ২ উইকেট নেন।

জবাবে ১৩০ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকির বলে লেগ বিফোর আউট হন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। ১ বলে খেলে শূণ্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আজই টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটারদের তালিকায় শীর্ষস্থান হারানো বাবর।

চতুর্থ ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিন নম্বরে নামা ফখর জামান। এতে ১৮ রানে ২ উইকেট হারে ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান। এ অবস্থা থেকে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন ইনফর্ম মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতেখার আহমেদ। তৃতীয় উইকেটে ৩৩ বলে ২৭ রান তুলেন তারা

২৬ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ২০ রান করা রিজওয়ানকে বিদায় করে আফগানিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন রশিদ।
দলীয় ৪৫ রানে রিজওয়ানের বিদায়ের পর পাকিস্তানের জয়ের পথ সুগম করেন ইফতেখার ও শাদাব খান। দ্রুত রান তুলেন শাদাব। এতে চতুর্থ উইকেটে ৪১ বলে ৪২ রান যোগ করেন তারা।

১৬ ও ১৭তম ওভারে ১০ রানের ব্যবধানে ইফতেখার ও শাদাবকে শিকার করে দারুনভাবে আফগানিস্তানকে খেলায় ফেরান ফরিদ আহমেদ ও রশিদ। ইফতেখার ৩৩ বলে ৩০ রান করে ফরিদের এবং ২৬ বলে ৩৬ রান তুলে রশিদের বলে আউট হন শাদাব।
১৮তম ওভারে নাওয়াজ ও খুশদিল শাহকে শিকার করে ম্যাচের লাগাম আফগানিস্তানের পক্ষে টেনে ধরেন রশিদ। শেষ ২ ওভারে হাতে ৩ উইকেট নিয়ে ২১ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রউফকে বিদায় দেন ফরিদ। ঐ ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা মারার পরের ডেলিভারিতে আউট হন আসিফ। এতে নবম উইকেট হারায় পাকিস্তান। ৮ বলে ১৬ রান করেন তিনি।

১ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ওভারে জিততে ১১ রান প্রয়োজন পড়ে পাকিস্তানের। ফারুকির করা শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন দশ নম্বরে নামা নাসিম শাহ। ৪ বলে ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১৪ রান করেন নাসিম। এই ইনিংস দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে রানের খাতা  খোলেন পেস বোলার নাসিম। বল হাতে আফগানিস্তানের ফারুকি-রশিদ ৩১ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।

আগামীকাল ভারতের মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। আর ৯ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে লড়বে পাকিস্তান-শ্রীলংকা। ১১ সেপ্টেম্বর হবে ফাইনাল।

সূত্র: বাসস