আর কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা চান না গাভাস্কার

আর কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা চান না গাভাস্কার

ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার

এশিয়া কাপের ১৫তম আসরের সুপার ফোর থেকেই বিদায় নিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। সুপার ফোরে টানা দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায়, ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ ভারত। ভারতের এমন পারফরমেন্সে ক্ষুব্ধ দেশটির সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। দলের এমন ভরাডুবিতে রোহিত-দ্রাবিড়দের কাছ থেকে কোন ধরনের অজুহাত শুনতে চান না গাভাস্কার।

ভারতের সংবাদমাধ্যমকে গাভাস্কার জানান, এশিয়া কাপে জাতীয় দলের এমন পারফরমেন্স খুবই হতাশার। কোন রকম ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট বা বিশ^কাপকে লক্ষ্য করেই দলকে যাচাই বাচাই করা হচ্ছে, এমন কোন অজুহাত রোহিত-দ্রাবিড়ের কাছে থেকে আর শুনতে রাজি না।

গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের সুপার টুয়েলভ থেকেই বিদায় নিয়েছিলো ভারত। এরপর ভারতীয় দলে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে দলকে শিরোপা এনে দিতে পারেন না বিরাট কোহলি, এমন অজুহাতে সেচ্ছায় অধিনায়কত্ব ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এরপর কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান রবি শাস্ত্রীও। এতে কোহলি-শাস্ত্রীর পরিবর্তে দলের দায়িত্ব পান রোহিত ও দ্রাবিড়।

আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপকে সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে শুরু করেন রোহিত ও দ্রাবিড়। কিন্তু বিভিন্ন সিরিজে দলে ব্যাপক পরিবর্তন করেছেন রোহিত-দ্রাবিড় জুটি।


‘ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট’ বিবেচনায় এক একটি সিরিজে ভিন্ন-ভিন্ন দল নিয়েছে খেলেছে ভারত। তাই এসব ভিন্ন-ভিন্ন সিরিজে অধিনায়কও হয়েছে ভিন্ন-ভিন্ন। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বিভিন্ন ফরম্যাটে সাত অধিনায়কের অধীনে খেলেছে ভারত। যা নিয়ে সমালোচনা হলেও, এসব বিষয়কে বিশ^কাপের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই দেখিয়েছেন রোহিত-দ্রাবিড়।


কিন্তু এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে না পারার ব্যর্থতায়, এসব অজুহাত শুনতে চান না গাভাস্কার। তার পরামর্শ, আর কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে শক্তিশালী একটি দল চূড়ান্ত করা।


তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে একই দল খেলানো হয়নি। যখন এক দল দীর্ঘ দিন ধরে খেলে, তখন ক্রিকেটারদের মধ্যে ভাল বোঝাপড়া তৈরি হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মধ্যে কোন ভুল নেই। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে, বারবার দল পরিবর্তন করা হচ্ছে। কোনও ক্রিকেটার দলের সাথে মানিয়ে নিতে পারছে না। তার আগেই সেই ক্রিকেটারের জায়গায় অন্য কেউ চলে আসছে।’

এশিয়া কাপের আগে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে বেশিরভাগ সিনিয়রা বিশ্রামে ছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলা, মাত্রদু’জন এশিয়া কাপের দলে ছিলেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এমন চিন্তা-ভাবনা মোটেও পছন্দ হয়নি গাভাস্কারের। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, এশিয়া কাপের আগে জিম্ববুয়েতে সিনিয়রা খেলতে যাবে। কিন্তু এশিয়া কাপের দলে থাকা বেশির ভাগ ক্রিকেটার এ সিরিজে খেললো না। সেখানে গিয়ে যারা ভাল খেললো তারা এশিয়া কাপের দলে সুযোগ পেল না। তাহলে কিভাবে দলের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হবে?’

দলের এমন অবস্থায় কিছুটা চিন্তিত গাভাস্কার। তবে গাভাস্কারকে আশা দিচ্ছে, বিশ^কাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের ৩টি করে টি-টোয়েন্টি সিরিজ । এছাড়া প্রোটিয়াদের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও আছে টিম ইন্ডিয়ার।

গাভাস্কার বলেন, ‘হ্যাঁ, কিছুটা চিন্তিত। তবে আমি খুব বেশি চিন্তিত নই, কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে আমাদের বেশ কয়েকটি ম্যাচ রয়েছে। আমি আশা করি, ঐ দু’টি সিরিজে কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ খেলতে যাওয়া দলই বেছে নেয়া হবে। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের অজুহাত ও পরীক্ষা-নিরিক্ষার কোন দরকার নেই। ভারতের হয়ে খেলার সময় কোন কাজের চাপ থাকে না। আসন্ন ম্যাচগুলি থেকে ভারতের সেরা দল বের করতে হবে।’

সূত্র: বাসস