পাবনায় কৃষকদের এ বছর পাটকাঠি থেকে আয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা

পাবনায় কৃষকদের এ বছর পাটকাঠি থেকে আয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা

পাবনায় কৃষকদের এ বছর পাটকাঠি থেকে আয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা

একসময়ের অবহেলিত পাটকাঠি এখন অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। কারণ পার্টিকেল বোর্ড এবং চারকোল কারখানায় এর ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য চীনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।পাবনা জেলার পাট চাষীরা, যারা পাটের কম দামের কারণে এই মৌসুমে লোকসানের মুখে পড়েছিল, তারা পাটের কাঠি বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন।

একসময় শুধু মাটির চুলার জ্বালানি, ঘরের বেড়া তৈরি এবং সুপারি ক্ষেতে ব্যবহৃত পাটকাঠি বিক্রি করে চলতি  মৌসুমে ৭০ কোটি টাকা আয় করছেন কৃষকরা।

পাবনা জেলার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন,“প্রযুক্তির মাধ্যমে শুকনো পাটের কাঠি পোড়ালে কার্বন  তৈরি হয়। এটি আতশবাজি, কার্বন পেপার, প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ারের কালি, মোবাইলের ব্যাটারি, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধ, সার এবং আরও অনেক কিছু তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তাই পাটকাঠির চাহিদা বাড়ছে।”

জহুরুল ইসলাম,  মোহাম্মদ আলী, স্বপন কুমার সরকারসহ  বেশ কয়েকজন পাটচাষি জানান, গত কয়েক বছর ধরে তারা পাটের কাঠি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছেন এবং বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি তা ক্রয় করায় তারা এখন আশার আলো দেখছেন। তাদের বর্তমানে ১০০ গোছা পাটকাঠি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ৪০০-৫০০ টাকা।

এ মৌসুমে অল্প বৃষ্টির কারণে জেলার কৃষকরা তাদের পাট পানি অভাবে সময়মতো পচাতে ব্যর্থ হয়েছিল, ফলে উৎপাদন খারাপ হয় এবং দাম কম হয়।

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৫৯২ মে.টন উৎপাদনের লক্ষ্যেমাত্রা নিয়ে মোট ৪৫,১১৮ হেক্টর জমি পাট চাষের আওতায় আনা হয়েছিল। সেখানে আবাদ হয় ৪৫,০৫০ হেক্টর জমি। আর কৃষকরা চলতি মৌসুমে ৭০ কোটি টাকার পাটকাঠি বিক্রি করতে পেরেছেন বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানান।

চাটমোহর উপজেলার পাট কাঠি ব্যবসায়ীরা জানান, তারা দেড় কোটি থেকে দুই কোটি টাকা মূল্যের পাটের কাঠি কিনে পার্টিকেল বোর্ড কারখানায় বিক্রি করেছেন। তাদের মতো  জেলার অনেক ব্যবসায়ী পাটকাঠির ব্যবসা করছেন।

ডিএই-র উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইফুল আলম বলেন, এক হেক্টর জমি থেকে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের পাটকাঠি পাওয়া যায় এবং এ বছর পাটকাঠি বিক্রি করে কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছেন।

পাবনা চেম্বার অ্যান্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন কৃষকরা যাতে বাঁচতে পারে সেজন্য পাটের কাঠির যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে বড় কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।