ছাত্রীর সঙ্গে ইবি প্রকৌশলীর চাঞ্চল্যকর কথোপকথন ফাঁস

ছাত্রীর সঙ্গে ইবি প্রকৌশলীর চাঞ্চল্যকর কথোপকথন ফাঁস

ছাত্রীর সঙ্গে ইবি প্রকৌশলীর চাঞ্চল্যকর কথোপকথন ফাঁস

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সাবেক প্রধান প্রকৌশলী) আলিমুজ্জামান টুটুলের সঙ্গে অজ্ঞাত এক ছাত্রীর কথোপকথনের অডিও ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামযুক্ত একটি ফেসবুক একাউন্টে ৬ মিনিট ২১ সেকেন্ডের অডিওটি পোস্ট করা হয়। এরপর মুহূর্তেই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ভাইরাল অডিওতে আলিমুজ্জামান টুটুলকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে একান্ত ব্যাক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। একইসঙ্গে ওই ছাত্রীকে পড়ালেখা শেষে তাকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে চাওয়া মাত্র খুশি করার মতো ছবি দিতে বলেন এবং যখন যা বলা হবে তা-ই করতে বলেন। অডিও যুক্ত করে দেওয়া ওই পোস্টে বলা হয়, আলিমুজ্জামান টুটুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে প্রলোভন দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্য সাধন করেন। অডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পাঠকদের জন্য কথোপকথনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো:

প্রকৌশলী টুটুল: একটা ছবি চাইলাম ছবি পাইলাম না, মনের কষ্ট থেকে গেলো।

অজ্ঞাত ছাত্রী: আহারে, আগে এতগুলা যে পিকচার দিলাম এগুলার কি হলো?

টুটুল: তুমি ডিলিট করতে বলছিলা এজন্য ডিলিট করে দিয়েছি।

ছাত্রী: এটা কিন্তু ঠিক না। আমি কিন্তু যথেষ্ট ছবি দিয়েছি।

টুটুল: তুমি দিবা, আমি যখন তোমার কাছে ছবি চাইব তখন ছবি দিবা। এটা আমার দাবি তোমার কাছে।

টুটুল: এখন দুটো সুন্দর সুন্দর ছবি দাও সেলফি তুলে। আমি যখন যেটা চাইব তখন সেটা করবা। একটাই অনুরোধ অন্য কোনো অনুরোধ নাই।

ছাত্রী: আপনি বাসায় গিয়ে ফ্রি হলে তখন.....

টুটুল: আমি এখন চাচ্ছি তুমি এখনই দাও।

ছাত্রী: এখন?

টুটুল: সমস্যা কি? যেমন আছো তেমনভাবেই দাও, তুমি তো আমার বোন। তোমার সাজগোজের কিচ্ছু করার দরকার নাই।

ছাত্রী: আমি সাজগোজ করিও না তেমন।

টুটুল: হুম। তুমি ছবি দিবা এমন...তোমার বন্ধুকে একটা ছবি দিবা ছবি দেখে বন্ধু খুশি হবে। একদম বোরকা মোরকা পড়ে সব ঢেকেঢুকে এরকম ছবি দিলে তো কোনো ই নাই।

ছাত্রী: তাই?

টুটুল: হুম, খুশি করার মতো ছবি দিবা।

ছাত্রী: ওহহ। খুশি করার মতো ছবি বলতে কেমন ছবি হবে।

টুটুল: সেটা তুমি জানো, আমি কিছু বলবনা তোমাকে।

ছাত্রী: ঠিক আছে তাই হবে।

টুটুল: এক্ষুণি দাও।

ছাত্রী: আচ্ছা।

টুটুল: তোমার সাথে আমার কথা হোক না হোক, তুমি যেদিন বলবা আমি পাস করেছি জব দেন, সেদিন থেকে চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ খুব দ্রুতই দুই মাসের মধ্যে একটা জব দেওয়ার। এ পর্যন্ত ৬-৭ শ জনকে জব দিয়েছি। তুমি জব পাবা যদি আমি বেঁচে থাকি।

ছাত্রী: অহ.. তাহলে তো আমার কনফার্ম হয়েই যাচ্ছে।

টুটুল: চাকরি নিয়ে টেনশন করো না।

ছাত্রী: হুম, আপনি থাকতে তো আমার কোন কিছুরই টেনশন নেই।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, আলিমুজ্জামান টুটুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও নিজ এলাকাবাসীর মাঝে বিনামূল্যে কোরআন, জায়নামাজ, তসবিহ, বৃক্ষসহ চাকুরির প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন বই বিতরণ করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। করোনাকালে বিনামূল্যে সবজির বাজার দিয়ে সুনাম কুড়ান তিনি। এ ছাড়া নিজের ফেসবুক পেজে নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ও পুরস্কার দিয়ে আসছিলেন তিনি।

এদিকে, ২০১৩ সালে কুষ্টিয়ায় এক শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের গোপন ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে আলিমুজ্জামান টুটুলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলা হলে গ্রেপ্তার হন তিনি। পরে আদালত থেকে খালাস পান।কথোপকথন ফাঁসের বিষয়ে জানতে চেয়ে আলিমুজ্জামান টুটুলের মুঠোফোনে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রধান মুন্সী শহিদ উদ্দিন মো. তারেক বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও বিব্রতকর। এটি যেহেতু তার ব্যক্তিগত বিষয় দাপ্তরিক কোন বিষয় না, এজন্য আমার কিছু বলার নেই।’