খালেদার মুক্তি, ফোনালাপ কাদের –ফখরুলের

খালেদার মুক্তি, ফোনালাপ  কাদের –ফখরুলের

ফাইল ছবি

গত দুইবছর যাবৎ কারাগারে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তার মুক্তির জন্য  নানা সময় নানা  কার্মসূচি  ‍দিয়েছে বিএনপি  ও সমমনা জোট । আর কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই তার মুক্তি আলোচনা রাজনৈতিক অঙ্গনে। বর্তমান সময়ে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তার মুক্তির বিষয়ে নানামুখি আলোচনা দলের ভেতরে বাইরে। তার প্যারোলে মুক্তির বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।  এ অবস্থায় দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিকথন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে ওবায়দুল কাদের টেলিফোন আলাপের বিষয়টি প্রকাশ করেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও আবেদন আসেনি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফোন করেছিলেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলে জানতে পেরেছি, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও আবেদন আসেনি।
গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের অবশ্য জানিয়েছেন, মির্জা ফখরুলের কাছ থেকে পাওয়া অনুরোধ তিনি যথা সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। এখন বিষয়টি তার বিবেচনায় আছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তিগতভাবেও এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা যাবে। তবে প্যারোল কি কি কারণে দেওয়া যায় এবং দোষী বন্দিকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, আর তারা কি কি কারণে প্যারোলে মুক্তি চান, এসব বিষয় উল্লেখ করে লিখিতভাবে তারা কোনও আবেদন এখনো করেনি । খালেদা জিয়ার দল কিংবা পরিবার যদি আবেদন করেন তবে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যদিটা পরে দেখা যাবে।’ আমাদের বক্তব্য হচ্ছে প্যারোলের আবেদনের সঙ্গে বিষয়টির মিল আছে কিনা, এটা খতিয়ে দেখা। তাদের আবেদন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার জন্য যৌক্তিক কিনা, এ বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। যেহেতু খালেদা জিয়াকে আদালত দোষী ঘোষণা করেছে, কাজেই মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটা আদালতের কাছেই যেতে হবে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের  বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অমানবিক কোনও কিছু সরকার করতে পারে না। তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টি সরকারের মাথায় আছে। তবে একটা বিষয় হচ্ছে তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা তার দলের লোকেরা যেভাবে বলেন, চিকিৎসকরা কিন্তু সেভাবে বলছেন না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে দাবি বিএনপি এতো দিন আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই করে আসছে তার সর্বশেষ উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে মানবিক আবেদনের মাধ্যমে। এখন সরকারের কোর্টেই বল ঠেলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সরকার সুনজরে নিলে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় কিছুটা বরফ গলতে পারে। এছাড়া সরকারের তরফে ইতিবাচক সাড়া না পেলে বিএনপির পরবর্তী পদক্ষেপেও জনসমর্থন মিলবে বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, তারা এখন পর্যন্ত সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের বিষয়ে আশাবাদী। কারণ এর আগে এ ধরণের আবেদনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই কথা বলেছেন।