ফের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

ফের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ছবি

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বের বরেণ্য ব্যক্তিদের একটি খোলা চিঠি নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর গত মঙ্গলবার ওই খোলা চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্বের ৪০ জন ব্যক্তি। চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে পুরো পাতাজুড়ে প্রকাশিত হয়েছিল।

সোমবার (১৩ মার্চ) কাতার সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ওই চিঠির প্রসঙ্গটি উঠে আসে।

এ সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূসকে ইঙ্গিত করে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যিনি এত নামীদামী নোবেল প্রাইজ প্রাপ্ত, তার জন্য ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে অ্যাডভারটাইজমেন্ট (বিজ্ঞাপন) দিতে হবে কেন? তাও আবার বিদেশী পত্রিকায়? এটাই আমার প্রশ্ন।?’

চিঠিতে ৪০ বিশ্বনেতার মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসঙ্ঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেড কেনেডি জুনিয়রের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু আইন আছে, সেই আইন অনুযায়ী সব চলবে এবং সেটা চলে।.. কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেয়, শ্রম আদালত আছে সেটা দেখে। এক্ষেত্রে সরকার প্রধান হিসেবে আমার তো কিছু করার নেই। সেখানে আমাকেই বা কেন বলা হল?’

এছাড়া ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকাকালীন তার পদ বহাল রাখার জন্য বিভিন্ন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

এ নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্য জানতে ইউনূস সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

গত ৪ মার্চ থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত কাতার সফর শেষে দেশে ফিরে সোমবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী।

কাতার সফরকালে প্রধানমন্ত্রী এলডিসি-৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি ইভেন্টে যোগ দেন।

কাতার সফরের নানা দিকসহ নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য ইত্যাদি নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

জাতিসঙ্ঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ হতে পারে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।

‘নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে’
নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা সেটা পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেইসাথে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন করে দেয়ার কথাও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম নির্বাচন কমিশন করার জন্য আইন করে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তাদের নির্ভরশীলতা সরানো হয়েছে। আওয়ামী লীগই প্রথম নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছে।’

ইভিএম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে ওদের আপত্তি, তাই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। ওরা যতটুকু ভালো বুঝে তাই করবে। কারণ, কমিশনকে অবাধভাবে গড়ে তুলেছি।’

এছাড়া অনেক ঘাত প্রতিঘাত মোকাবিলা করে তার সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছেন সেইসাথে গণতান্ত্রিক ধারা এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

সূত্র : বিবিসি