লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে উপজেলার তোরাবগঞ্জ উত্তর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পর তোরাবগঞ্জ বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জন্টু দাশ জানিয়েছেন, ঘটনার পরে আহত ৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়,  হাসপাতালে কমলনগর উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাজু, সাহেবেরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মো. শরীফ, ছাত্রলীগ কর্মী মো. ইমন ভর্তি হয়েছেন। এসময় আরো ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হামলার ঘটনায় একে-অপরকে পাল্টাপাল্টি দায়ী করেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের বাসিন্দা ইস্কান্দার মির্জা শামীম কমলনগর রামগতি উপজেলার কয়েকটি স্থানে কৃষকদের ক্ষেতের ধান কেটে দেওয়ার কর্মসূচি নেয়। মঙ্গলবার উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে এক কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার প্রোগ্রাম ছিল তার। নির্বাচন কেন্দ্রীক সম্প্রতি তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক কর্মকাণ্ডে আসেন। 

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে লক্ষ্মীপুরে  সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক রাকিব ইমাম হত্যার প্রতিবাদে তোরাবগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। দুপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কৃষকলীগ ও  স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তোরাবগঞ্জ বাজার হয়ে চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুর নেতৃত্বে ইস্কান্দার মির্জার অনুসারীরা শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে জেলা শহরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তাদের বহরটি তোরাবগঞ্জ বাজারে আসলে আগ থেকে সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়৷ এসময় তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। সেখানে ইস্কান্দার মির্জার সমর্থকদের কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানায়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন ও সমাবেশ আহ্বান করেছি। ঘটনার সময় হঠাৎ আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুর নেতৃত্ব মোটরসাইকেলবাহী একদল লোক এসে তাদেরকে রাস্তা ছেড়ে যেতে বলে। এনিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীদের সাথে হট্টগোল শুরু হওয়ার এক ফাঁকে মানববন্ধনকারীদের ওপর তারা হামলা করে। এতে ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ ও শ্রমিক লীগের ১০ জন আহত হয়।

এ বিষয়ে জানতে কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুর ফোনে একাধিক কল দিয়ে ও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। 

অন্যদিকে শামীম ইস্কান্দার মির্জা বলেন, জনগণের সেবা করার উদ্দেশ্যে আমি মাঠে নেমেছি। কিন্তু একটি পক্ষ আমার সেবামূলক কর্মকান্ড ব্যাহত করতে চাচ্ছে। আজকে কৃষকের ধান কাটার প্রোগ্রাম ছিল। কলমনগর থেকে দলীয় লোকজন এসে আমাকে জেলা শহর থেকে ওইস্থানে নিয়ে যাবে। তারা আসার সময় কিছু দুষ্কৃতিকারী আমার লোকজনের উপর হামলা করেছে। এতে আমার লোকজন আহত এবং অনেকগুলো মোটরসাইকেল ভাংচুর হয়েছে। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান রাজুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। 

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন