ধর্ষণের পর শিশুর মৃত্যু, ফরিদপুরে যুবকের যাবজ্জীবন

ধর্ষণের পর শিশুর মৃত্যু, ফরিদপুরে যুবকের যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরে ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় লিটন মাতবর (২২) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বুধবার (৩ মে) দুপুর ১২টায় ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন।


এ সময় আসামি লিটন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে তাকে কড়া পুলিশ পাহারায় ফরিদপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ওই শিশুর মা বাজারে চায়ের দোকানে পানি সরবরাহ করে থাকেন। এজন্য তাকে বেশিরভাগ সময় কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। শিশুটি বাড়িতে একাই থাকতো। 

এই সুযোগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামের রাশেদ মাতবরের ছেলে আসামি লিটন মাতবর ওই বাড়িতে যাতায়াত করে শিশুটির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে লিটন নানা প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে।

ঘটনার দিন ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশুটির মা বাড়িতে না থাকায় লিটন বাড়িতে প্রবেশ করে শিশুটির মুখে কাপড় গুজে তাকে ধর্ষণ করে এবং এ কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেয়। কাউকে এ কথা বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয় লিটন। পরবর্তীতে শিশুটি এ কথা কাউকে না বলে ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকে। প্রায় দুই মাস পর শিশুটি তার মায়ের কাছে সব কথা খুলে বললে শিশুটির মা তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সেই সঙ্গে তিনি কয়েক দফা সালিস বৈঠকও করেন। তবে ওইসব সালিসের রায় মানেনি লিটন। পরে এ ঘটনার ৭৩ দিন পর শিশুটির চাচা বাদি হয়ে ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ লিটন মাতবরকে একমাত্র আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরদিন ২৫ মার্চ শিশুটি চিকিৎসাধীন মারা যান।

ঘটনা তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রতন কুমার মন্ডল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি স্বপন পাল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় একমাত্র আসামি লিটন মাতবরকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, আসামির বিরুদ্ধে সকল প্রমাণাদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ ৯(২) ধারায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

সূত্র: কালেরকন্ঠ