মোখা: চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, বিদ্যুৎ সংকট

মোখা: চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, বিদ্যুৎ সংকট

ফাইল ছবি

ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এর ফলে চট্টগ্রামে গতকাল শনিবার থেকে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শঙ্কার কথাও জানিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

জানা যায়, মহেশখালীর দুটি এলএনজি টার্মিনালের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দৈনিক গড়ে যে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আসত তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চট্টগ্রাম নগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দেয়।

শনিবার সকাল থেকে নগরীসহ কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। আজ রোববার সকাল ৮টার দিকে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ও আংশিক চালু থাকতে পারে। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৮০ মেগাওয়াট, উৎপাদন হয় ১০ হাজার ৭৪৯ মেগাওয়াট। এ সময় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল এক হাজার ৯৫৯ মেগাওয়াট।

কেজিডিসিএল’র উপ মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও সমন্বয়) মীর মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় পাইপলাইনে গ্যাস সঞ্চালন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে আজ রোববার কক্সবাজার ও অন্যান্য স্থানে আঘাত হানতে পারে। এ সময় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটতে পারে।

এ ছাড়া বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার দরুণও প্রায়ই বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে। বৈদ্যুতিক লাইনে ডালপালাসহ গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। এতে বৈদ্যুতিক লাইন ও পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটে যান্ত্রিক ত্রুটি। সুতরাং এরূপ বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে গাছ সরানোসহ যান্ত্রিক ক্রটি সারাতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়। এমতাবস্থায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সব কারিগরি কর্মীরা সদা তৎপর আছেন।

বর্তামানে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। ঝড়ের প্রভাবে এরই মধ্যে উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

রোববার সকাল পৌনে ৯টায় দেয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। সকালের বুলেটিনে জানিয়েছে, এটি আরও ঘণীভূত হয়ে বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ মিয়ানমারের সিটুয়ের কাছ দিয়ে কক্সবাজার অতিক্রম করবে।

ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার গতির ঝড়ো হাওয়ার শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঝড়টি।