ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পথ খুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পথ খুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পথ খুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র বলছে তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে এফ-সিক্সটিনের মত আধুনিক যুদ্ধবিমান সরবরাহ করতে পারবে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভ্যান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার জাপানে জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে আগত নেতৃবৃন্দকে তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কসহ বেশ কিছু দেশ তাদের নিজেদের কাছে থাকা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনকে দিতে পারবে।আমেরিকার তৈরি এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান ইউক্রেন অনেক দিন ধরেই চাইছিল এবং এগুলো পাবার পথ উন্মুক্ত হওয়া তাদের জন্য এক বড় খবর।প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি একে এক 'ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত' বলে অভিহিত করেছেন।তবে রাশিয়া বলেছে, কোনো দেশ যদি ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয় - তাহলে তারা বিরাট ঝুঁকির মুখে পড়বে।

রুশ সরকারি সংবাদমাধ্যমে বলা হয় ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার গ্রুশকো বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো উত্তেজনা বাড়ানোর রাস্তা নিয়েছে ।"আমাদের সকল পরিকল্পনায় এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে এবং আমাদের নিজ লক্ষ্য অর্জনের সকল উপায় আমাদের হাতে আছে," বলেন তিনি।

মি. সালিভ্যান বলেন, এই জেটবিমান ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনের পাইলটদেরকে প্রশিক্ষণও দেবে মার্কিন সৈন্যরা।তিনি অবশ্য আভাস দিয়েছেন যে ইউক্রেন যেসব যুদ্ধবিমান পাবে তা শুধু আত্মরক্ষামূলক কাজেই ব্যবহার করা যাবে এবং রাশিয়ার ভূখন্ডের ভেতরে কোন আক্রমণ চালানোর সক্ষমতা বা এরকম কোন সহায়তা - কোনটাই যুক্তরাষ্ট্র দেবে না।

ইউক্রেনের আশা পূরণ

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ অভিযান শুরুর সময় ইউক্রেনের হাতে ১২০টি যুদ্ধবিমান ছিল বলে মনে করা হয় - যা প্রধানত সোভিয়েত যুগের মিগ-২৯ এবং সু-২৭ জাতীয়।কিন্তু কর্মকর্তাদের মতে রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতার সাথে এঁটে উঠতে হলে ইউক্রেনের অন্তত ২০০ জেট দরকার। সেকারণে দেশটি বহুদিন ধরেই পশ্চিমা মিত্রদের কাছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চাইছিল - যা শব্দের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুতগামী এবং আকাশে ও স্থলভাগে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এফ-১৬র মত বিমান পেলে ইউক্রেন রুশ প্রতিরক্ষাব্যূহ অতিক্রম করে আক্রমণ চালাতে পারবে।যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো জোটের বেশ কিছু দেশ ইউক্রেনকে আধুনিক জেট দেবার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিল, কারণ এতে রাশিয়ার সাথে সরাসরি সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

কোন দেশ আমেরিকার যুদ্ধ সামগ্রী পেলেও যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন ছাড়া তারা তা অন্য কারো কাছে বিক্রি বা রপ্তানি করতে পারে না। তাই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এ সিদ্ধান্তের ফলে ডেনমার্ক, বেলজিয়াম বা নেদার‍ল্যান্ডসের মত দেশগুলো তাদের কাছে থাকা কিছু এফ-১৬ বিমান ইউক্রেনকে দিতে পারবে।

ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রঁ বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিতে ইচ্ছুক তবে তারা কোন বিমান দেবে না।ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও ইউক্রেনীয় পাইলটদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করার কথা বলেছেন। তবে যুক্তরাজ্যের কোন এফ-১৬ বিমান নেই।

কিয়েভ লক্ষ্য করে রুশ ড্রোন হামলা

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটির রাজধানী কিয়েভ লক্ষ্য করে আবার রুশ ড্রোন হামলা হয়েছে।তারা বলেন তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে তবে কিয়েভের কিছু এলাকায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোনের টুকরো এসে পড়েছে এবং একটি ভবনের ছাদে আগুন ধরে গেছে।

রুশ-নিয়ন্ত্রণে থাকা মারিউপোল শহরে তিনটি জোরালো বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। মারিউপোলের নির্বাসিত পৌর কাউন্সিল বলেছে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী শহরটির বিমান বন্দরে বিস্ফোরণ ঘটেছে - যেখানে রুশ সেনারা অবস্থান নিয়েছে।অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এখন জি-সেভেন জোটের নেতাদের সাথে বৈঠক করতে জাপানে রয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি