পাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনে চুরি : মাস পেরলেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি

পাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনে চুরি :  মাস পেরলেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি

পাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনে চুরি : মাস পেরলেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের বাসভবনে চুরির ঘটনার প্রায় একমাস অতিবাহিত হলেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। গত ২ মে রাতে উপাচার্যের বাসভবন থেকে ১৫ টি গ্রীল চুরি হয় যার ওজন প্রায় ২২৫ কেজি। ঘটনার চারদিন পর ৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে এ ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, কার মাধ্যমে ঘটেছে সেটা বের করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টর ড. কামাল হোসেনকে আহবায়ক এবং সিকিউরিটি বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার (সিকিউরিটি) এসএম হাসিবুর রহমান কে সদস্য সচিব করে সাত (০৭) সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। এ কমিটির বাকী সদস্যরা হলেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহিম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফারুক হোসেন চৌধুরী এবং সহকারী রেজিস্ট্রার এসএম জহুরুল ইসলাম।

এ কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনাটির তদন্ত করে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন পেশ করার জন্য বলা হয়েছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, তদন্ত কমিটি গঠন করার এক মাস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এমনকি ঐ কমিটি এ নিয়ে গত এক মাসে কোন মিটিংও করেননি বলেও জানা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের বাসভবনে চুরির বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে চুরি এটা গুরুতর একটা ইস্যু।

 বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু শক্তিশালী সেটা আমরা এই ঘটনা দেখেই বুঝতে পারি। এর তদন্ত অতিদ্রুত হওয়া প্রয়োজন ছিল এবং অপরাধীদের খুঁজে বের করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষগুলোর গাফিলতির কারণে সেটা এখনো করা হয়নি। আমরা চাই দ্রুত এই তদন্তের প্রতিবেদন পেশ করা হোক এবং অপরাধীরা ধরা পড়ুক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক আবাসিক এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একের পর এক অঘটন ঘটছে । দায়সারা তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

ফলে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ফলে আমরা লক্ষ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, নির্মাণশ্রমিক ও ঠিকাদারদের মারপিটের মতো ঘটনা যার সর্বশেষ সংষ্কার ভিসির বাঙলোয় চুরি। দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতা ও গাফিলতিতে অপরাধীরা এভাবে পার পেয়ে যাওয়ায় তারা ক্রমে লাগামহীন হয়ে উঠছে। ফলে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বেড়েই চলেছে। তবে তদন্ত কমিটি কোন মিটিং না করা এবং দায়িত্বে গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কমিটির আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন জানান, আমরা কোন মিটিং করিনি এ কথাটা মিথ্যা এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিটি দুটি মিটিং ইতোমধ্যে করেছে

আজকে (রোববার) চূড়ান্ত মিটিং করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব এসএম হাসিবুর রহমান বলেন, এই ঘটনা নিয়ে আমরা অনেকগুলো কাজ ইতোমধ্যে করেছি। সাইট ভিজিট, সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ, সিকিউরিটি গার্ড, আনসার সদস্য, নির্মাণ শ্রমিক সবার লিখিত সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আজকে (রোববার) এ নিয়ে আমাদের মিটিং আছে। এ নিয়ে আমরা কী করবো তার সিদ্ধান্ত আজকে নিবো। তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আজকেই দেওয়া হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া, কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে কবে প্রতিবেদন জমা দিবে। তবে দ্রুততম সময়ে মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।