লন্ডনে ১৮ বছরের যুবকের ১৯ বছরের দণ্ড

লন্ডনে ১৮ বছরের যুবকের ১৯ বছরের দণ্ড

ফাইল ছবি।

পূর্ব লন্ডনে লেইটনস্টোন এলাকায় গোলাম সাদিক (১৮) নামের এক কিশোরকে ২২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ১৮ বছর বয়সী ইমাদ মিয়াকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এমাদ মিয়া বাংলাদেশি  বংশোদ্ভূত বলে জানা গেছে। ২০২২ সালের আগস্টের ওই ঘটনায় এমাদ মিয়াকে গত এপ্রিলে লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্টে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মঙ্গলবার (২৭ জুন) এ রায় ঘোষণা করা হয়।

মুখোশ ও গ্লাভস পরে মাথায় হুডি দিয়ে ঢেকে এমাদ মিয়া গোলাম সাদিককে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তার ছুরিকাঘাতে সাদিক নিহত হন। সলিহলের বাসিন্দা এমাদ মিয়া অন্য একজনের পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অনলাইনে ছুরিটি কিনেছিল। কারণ ঘটনার সময় সে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল।

 

এমাদ তার দাদাকে দেখতে তার মায়ের সঙ্গে লন্ডনে গিয়েছিল। কিন্তু সফরের সময় সে নিজের পরিচয় গোপন করে একটি বাইক ভাড়া করে। এই হত্যাকাণ্ডের সব কিছুই সিসিটিভিতে ধরা পড়ে।

লুইস ক্রাউন কোর্টে নিহত সাদিকের মা খালেদা পারভীনের পক্ষে ইমাদ মিয়ার সাজা ঘোষণার আগে একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়। বিবৃতিকে বলা হয়, তিনি পিৎজার দোকানের বাইরে তার ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি লিখেন, আমি আজ এখানে বিচারের জন্য এসেছি। আমরা আমাদের পৃথিবীকে হারিয়েছি। দয়া করে এ খুনিকে অন্য কারও সঙ্গে এটি করতে দেবেন না। আমার সন্তানকে এমন খুনির হাত থেকে রক্ষা করতে না পারার জন্য আমি নিজেকে দায়ী করি।

আদালতকে বলা হয়, এমাদ মিয়া তার বিরুদ্ধে ঘটা সহিংস ঘটনার কারণে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন এবং তার হালকা অটিজম রয়েছে।

আদালতে পড়া আসামির লেখা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমি যা করেছি তার জন্য আমি দুঃখিত, আমি এটা করতে চাইনি। আমি লিখতে পারদর্শী নই। তাই আমি আমার মাকে লিখতে বলেছি। গোলাম সাদিকের পরিবারের জন্য আমি দুঃখিত ও অনুতপ্ত।

বিচারক ক্রিস্টিন লাইং কেসি ইমাদকে ১৯ বছরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

এর আগে এমাদকে পৃথক একটি ঘটনায় হাতুড়ি দিয়ে আক্রমণের ঘটনায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। আদালত এমাদ মিয়ার মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলোকে বিবেচনায় নিয়েছিলেন। বিচারক রায়ে বলেছেন, যদিও আমার কোনও সন্দেহ নেই যে আপনি গোলাম সাদিকের সর্বোচ্চ ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন, তবে আমি আপনাকে সেই সন্দেহের সুবিধা দেবো যে আপনি তাকে হত্যা করতে চাননি।