গ্রেফতার আল-কায়েদার জঙ্গি ভারতেও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি’

গ্রেফতার আল-কায়েদার জঙ্গি ভারতেও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি’

ছবিঃ সংগৃহীত।

পুলিশের হাতে গ্রেফতার ইকরামুল হক ওরফে মিলন ভারতেও অন্যতম ‘মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি’। পুলিশের দাবি, ইকরামুল হক ভারতীয় উপমহাদেশ আল-কায়েদার (একিউআইএস) দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা। ভারতেও একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত তিনি। ভারতের তিনি ছিলেন অন্য নামে।

জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ে পুলিশ জানতে পারে ইকরামুল ভারতে আল–কায়েদার দাওয়া শাখার প্রধান। তার সাংগঠনিক ছদ্মনাম আবু তালহা ও মাওলানা সাবেত। ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি হিসাবেও তাঁকে খুঁজছিল ভারতের পুলিশ। ওই জঙ্গি নেতার ভারতীয় পাসপোর্ট এবং তাঁর স্ত্রীর ভারতীয় আধার কার্ডও ছিল। তবে, মাসকয়েক আগে তাঁরা চলে আসেন বাংলাদেশে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) জানিয়েছে, বছর ৩০-এর ইকরামুল বাংলাদেশের আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা ওসমান গণি ওরফে আবু ইমরানের ঘনিষ্ঠ। গত ৩০ মে ঢাকার মাদারটেক থেকে গ্রেফতার করা হয় ইকরামুল এবং তার স্ত্রী ফারিয়া আফরিনকে। এখন দুজনেই আছেন কারাগারে । ফারিয়ার কাছেই আছে তাদের শিশুসন্তান। যদিও ইকরামুলের পরিবার দাবি করে, গত ৩০ এপ্রিল ময়মনসিংহ থেকে তাদেরকে ধরা হয়।

সিটিটিসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সস্ত্রীক ইকরামুলকে। পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ইকরামুল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইকরামুলের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর বোরোরচর গ্রামে। তিনি ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসা থেকে ২০১৭ সালে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন। মাদ্রাসায় পড়াশোনার সময় ইকরামুল আনসার আল ইসলামের বর্তমান আমির ওসমান গণির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ইকরামুল ২০১৮ সালে ভারতে দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হন। তিনি যুক্ত হন একিউআইএস-এর সঙ্গে। এই সংগঠনের ‘দাওয়া বিভাগের’ শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ইকরামুল, কোচবিহারের দিনহাটা এলাকার বাসিন্দা হিসাবে দেখিয়ে নূর হোসেন নামে ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করেন। তার স্ত্রী ভারতীয় আধার কার্ড করেন মরিয়ম খাতুন নামে। বাংলাদেশের পুলিশ জানিয়েছে, ইকরামুলের বিরুদ্ধে ভারতে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। মাস সাতেক আগে স্ত্রীকে নিয়ে ইকরামুল বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

জানা গিয়েছে, গত ২৪ মে এটিএস একিউআইএসের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গুজরাট থেকে বাংলাদেশি চার তরুণকে গ্রেফতার করে। তাঁদের জেরা করেই পুলিশ ইকরামুলের নাম জানতে পারে। ওই চারজন জেরায় স্বীকার করে ইকরামুলের মাধ্যমেই তারা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। গত বছর ভুপাল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে এনআইএ এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে আরও আটজনকে গ্রেফতার করে এটিএস।

এটিএস জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা একিউআইএস, জেএমবি ও আনসার আল ইসলামের সদস্য। একিউআইএস ও বাংলাদেশের জেএমবি ভারতে নেটওয়ার্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সিটিটিসির উপকমিশনার এস এম নাজমুল হক জানান, এটিএস গত বছর থেকে ইকরামুলকে খুঁজছিল। তারা আবু তালহা নামেই খুঁজছিল। পরে জানতে পারে এই ব্যক্তি বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। ইকরামুলের স্ত্রী ফারিয়া আফরিনও জঙ্গি সংগঠনের মহিলা শাখার সদস্য।