কুবি ক্যাফেটেরিয়ায় অস্বাস্থ্যকর খাবার, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কা

কুবি ক্যাফেটেরিয়ায় অস্বাস্থ্যকর খাবার, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কা

ফাইল ছবি

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অভ্যন্তরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একমাত্র খাবার গ্রহণের জায়গা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। তবে নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর ও দূষিত খাবারের পরিবেশিনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্টরা।শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মানহীন খাবার গ্রহণের কারণে বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির শঙ্কা।

দীর্ঘদিন প্রশাসনের পক্ষে থেকে ক্যাফেটেরিয়ার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও মানহীন খাবারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় নিয়মিতই পরিবেশিত হয় পঁচা, বাসি ও মানহীন খাবার। যার মধ্যে রয়েছে পোড়া তেলে পঁচা মাছ ভাজা, নিম্নমানের চাল, পোকা খাওয়া সবজি ও বাসি তরকারি। খাবারের প্লেটে পোকা-মাকড় পাওয়ার চিত্র সাধারণ হয়ে উঠেছে।

এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক বার লিখালিখি করেন। ২৪ জুলাই তাশফিক আব্দুল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থী খাবারের প্লেটে পোকা সহ একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, '' বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারকেরা সপ্তাহে কতদিন ক্যাফেটেরিয়ার খাবার গ্রহণ করেন? তারা কি এসব চিত্র দেখেন না?" সরেজমিনে দেখা যায়, কোন ধরনের সুরক্ষা ছাড়া অপরিষ্কার হাতে খাবার পরিবেশন, একবার ব্যবহার যোগ্য কাপ কয়েকবার ব্যবহার, ক্যাফেটেরিয়ার অভ্যন্তরে যত্রতত্র ময়লার স্তূপ, বেসিনের বেহাল দশা, অপরিষ্কার প্রক্ষালন কক্ষ ও স্যাঁতসেঁতে মেঝের চিত্র।

একাধিক শিক্ষার্থী নিউজজোনবিডিকে বলেন, ''খাবার নিতে গিয়ে ভাতে একাধিকবার পোকা পেয়েছি। মাছ খাওয়ার সময় পঁচা গন্ধ বের হয়। এছাড়া সবজিতেও তেলাপোকা পাওয়া গিয়েছে বহুবার। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নাজেহাল হয়ে দাঁড়াবে।''

সার্বিক বিষয়ে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, '' গরমের কারণে হাত ঘেমে যায় তাই হাতে গ্লাভস পরা হয় না। পানির কলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমরা ক্যাফেটেরিয়াকে স্বাস্থ্যসম্মত রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।"

এ ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কুবি মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদা আক্তার (মুক্তা) বলেন, ''মেডিকাল সেন্টারে শিক্ষার্থীরা আসেন যাদের অধিকাংশই পেটের সমস্যার শিকার। এটা মূলত অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের কারণেই।''

তিনি বলেন, ''ক্যাফেটেরিয়ার সুপেয় পানির অভাবে ও দূষিত খাবার গ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানিবাহিত রোগ 'হেপাটাইটিস-এ' ও 'হেপাটাইটিস-ই' পেপটিক আলসার, ডায়রিয়া ও আমাশয়ের মতো ব্যাধি শরীরে বাসা বাধতে পারে।''

ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ''আমি বারবার পরিচালককে বলি ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে, পঁচা বাসি খাবার না রাখতে কিন্তু সে সাময়িক ভাবে মেনে চললেও আবার আগের মতো হয়ে যায়। এবার উধ্বর্তন প্রশাসন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।''

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড হুমায়ুন কবির বলেন, ''উপাচার্য বর্তমান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি ফিরলে ক্যাফেটেরিয়ায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও খাবার নিশ্চিতকরণ ও সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করব।''