ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় অনেক বছর পরেও কবরের সন্ধান পাবেন স্বজনরা : মেয়র আতিক

ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় অনেক বছর পরেও কবরের সন্ধান পাবেন স্বজনরা : মেয়র আতিক

ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় অনেক বছর পরেও কবরের সন্ধান পাবেন স্বজনরা : মেয়র আতিক

এখন থেকে অনলাইন সেবার মাধ্যমে অনেক বছর পরেও অতি সহজেই মৃত ব্যক্তির কবরের সন্ধান পাবেন তার স্বজনরা। ডিজিটাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনরা এই তথ্য জানতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

গুলশানে নগর ভবন অডিটোরিয়ামে আজ ডিএনসিসির স্মার্ট ডিজিটাল কবরস্থান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘কবরস্থানে কত কবর আছে, কোথায় কবরের লোকেশন ছিলো একটা জেনারেশন পরে আর কেউ এই তথ্য জানতে পারতো না। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যার ফলে এখন ডিজিটাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনরা অনেক বছর পরেও কবরের তথ্য জানতে পারবেন। কবর কোথায় ছিলো এটা নিয়ে কেউ দিশেহারা আর হবে না। আমরা যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ডাটা রাখতে পারি তাহলে তারা অনেক বছর পরেও জানতে পারবে এসব তথ্য।’

মেয়র বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের পর এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে। স্মার্ট বাংলাদেশে কবরস্থানের ব্যবস্থাপনাও স্মার্ট হতে হবে। আজকের ডাটা যদি সুরক্ষিত থাকে তাহলে আমরা অনেক বছর পরেও জানতে পারবো তথ্য। হাতের মুঠোয় টোটাল ম্যানেজম্যান্ট থাকবে কবরস্থানের। ডিএনসিসির কবরস্থানের সব তথ্য যুক্ত হয়েছে অনলাইন সেবায়। এর ফলে ডিএনসিসির ডিজিটাল সেবার পরিসর আরও একধাপ এগিয়ে গেলো।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। চ্যালেঞ্জ নিয়েও আমরা ম্যাপিং কাজ শুরু করেছি। পরবর্তিতে কবরস্থানে বড় বড় ডিজিটাল স্ক্রিন থাকবে, আমরা সেখানে দেখতে পাবো কবরের তথ্য। এগুলোকে টোটাল ম্যানেজম্যান্টের মধ্যে হাতের মুঠোয় আনতে আমরা কাজ করছি। ঢাকা উত্তরের ছয়টি কবরস্থান ডিজিটাইজেশন করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা এমন সেবা দিতে চাই যাতে নগরবাসীর পাশাপাশি বিদেশেও যারা আছেন তারা যেন তাদের স্বজনদের কবরের সার্বিক তথ্য হাতের মুঠোয় পায়। পাশাপাশি কবর কোথায় দিবে, কোথায় ফাঁকা আছে তার সার্বিক তথ্য পেয়ে যাবে ঘরে বসে অ্যাপের মাধ্যমে।’

তিনি বলেন, কবরস্থানে নির্দিষ্ট মেয়াদে কবর সংরক্ষণের খরচ বাড়িয়েছি, এর কারণ এমনিতেই কবরের জায়গার সঙ্কট। তাই কবর সংরক্ষণকে নিরুৎসাহিত করার জন্য সংরক্ষণ খরচ বাড়ানো হয়েছে। বনানী কবরস্থানেও যদি কেউ কবর দিতে আসে, আর সেটা যদি স্থায়ী সংরক্ষণ না করা হয়, তাহলে সেই কবর দেয়ার খরচ রেখেছি মাত্র ৫০০ টাকা। তবে কবর সংরক্ষণ করতে চাইলে সেটা অনেক খরচ পড়বে।মেয়র বলেন,  ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ট্যাক্স আর ক্যাশে নেয়া হচ্ছে না। সব এখন হচ্ছে অনলাইনে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স অনলাইনে দেয়ার সার্বিক কার্যক্রম শিগগিরই উদ্বোধন করা হবে। অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। সবাইকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, Graveyard Management DNCC নামে অ্যাপটি গুগুল প্লে স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। কবরস্থানে না গিয়েও একজন সেবাগ্রহীতা এই অ্যাপে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রদান করে লাশ দাফনের জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করে লাশ নিয়ে নির্দিষ্ট কবরে দাফন করতে পারবেন। এই অ্যাপের ফেস টু (২) তে কবরস্থানে দাফনদের তথ্যভান্ডার থাকবে, পাশাপাশি দাফন সনদ সংগ্রহ করা যাবে।

এছাড়া বহু পুরাতন কবরের অবস্থান কোথায় ছিলো, কার নামে কোন জায়গায় ঠিক কবর দেয়া হয়েছিল, বর্তমানে কবর দেওয়ার জন্য কোথায় ফাঁকা জায়গা রয়েছে, কোন পুরাতন কবরের উপর নতুন কবর বসবে কবরস্থান সংক্রান্ত এমন যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সব কবরস্থানই পর্যায়ক্রমে স্মার্ট কবরস্থান ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের আওতায় আনা হবে। প্রথমে ৬টি স্মার্ট ডিজিটাল কবরস্থান ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে থাকছে। কবরস্থান গুলো হলো- বনানী কবরস্থান, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, রায়ের বাজার কবরস্থান, উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টর কবরস্থান, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর কবরস্থান ও উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান।

ডিএনসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইসিডিডিআর,বি নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ এবং সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও সিনিয়র ডিরেক্টর শামস এল আরেফিন, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, কাউন্সিলর এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।

সূত্র : বাসস