স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কিছু উপায়

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কিছু উপায়

প্রতীকী ছবি।

বর্তমানে আমরা এমন একটি যুগে বাস করছি, যেখানে যেকোনো তথ্যই সহজলভ্য। সংবাদপত্র, শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ইত্যাদি নানা স্থানে যেকোনো তথ্য যেকোনো সময় পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সব তথ্যই কি আমাদের মনে থাকে? কাজের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যই আমরা ভুলে যাই। শুধু তাই নয়, কাজের মধ্যে হয়তো ভুলে যাই যে গ্যাসের ওপর দুধ চাপানো ছিল বা বাথরুমে বালতি ভরার জন্য কল খুলে এসেছিলাম।

ফলে দুধ পুড়ে যায় বা বাথরুম ভেসে যায়।  তাই এখন প্রয়োজন স্মৃতিশক্তি মজবুত করা। এমন কিছু উপায় আছে, যার সাহায্যে সহজেই স্মৃতিশক্তি বাড়ানো যায়। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।

ফোকাস
কিছু কিছু ব্যক্তি একসঙ্গে অনেক কাজ করতে ( মাল্টি টাস্কিং) পারদর্শী। কোনো কোনো চাকরির ক্ষেত্রে মাল্টি টাস্কিং অপরিহার্য। মাল্টি টাস্কিং ভালো হলেও একসময় একটি কাজ করলে যেকোনো কিছুই বেশি ভালো করে মনে রাখতে পারবেন না। মাল্টি টাস্কিংয়ের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখলে প্রয়োজনীয় তথ্য মনে থাকবে।

চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
বর্তমানে আমরা সবাই জানি কিভাবে মানসিক অবসাদ ও চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। আমাদের স্পষ্টভাবে চিন্তাভাবনার ক্ষমতাও লোপ পাচ্ছে। মনের মধ্যে চিন্তার মেঘ জমতে শুরু করলে কোনো কিছুই ভালোভাবে মনে রাখা যাবে না। অবসাদের তুলনায় স্বস্তিতে থাকলে ব্যক্তি যেকোনো বিষয় ভালোভাবে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য মনে রাখতে পারে। তাই বর্তমানের ব্যস্ত জীবনে চাপে থাকা স্বাভাবিক হলেও, এই চাপ ঝেড়ে ফেলার কোনো সুযোগই হাতছাড়া করবেন না।

খাদ্যাভ্যাস
বেরি, লাল আঙুরের মধ্যে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি কেমিক্যাল থাকে। মস্তিষ্ক এই কেমিক্যাল শোষণ করে স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বাদাম, পালংশাক, ডার্ক চকোলেট, গ্রিন-টি, অলিভ অয়েল, শাকসবজি এবং বাঁধাকপিও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে।

মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত চাপে ফেলবেন না 
মস্তিষ্কের নিজস্ব একটি গ্রহণক্ষমতা রয়েছে। পরীক্ষার আগে সারা দিন-রাত জেগে পড়াশোনা করার, অতিরিক্ত তথ্য আদায় করার প্রবণতা অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই দেখা দেয়। এসব তথ্যই মস্তিষ্ক নিজের ক্ষমতা এবং সময়মতো গ্রহণ করতে পারবে। আপনার তাড়া দিয়ে পড়াশোনা বা জ্ঞান অর্জনের প্রবণতার কারণে কিছু মনে থাকবে না, বরং যেটুকু মনে রাখা যেত তা-ও ভুলে যাবেন। তাই একই রাতে সব পড়া পুরো করার পরিবর্তে স্বস্তিতে ও শান্তিতে পড়াশোনা করুন। এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়।

নিজের ভাষায় অনুবাদ করুন
অনেক সময় তথ্য যেভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়, সেভাবে আমরা মনে না-ও রাখতে পারি। তাই যেকোনো তথ্যই হোক না কেন, তাকে নিজের ভাষায় অনুবাদ করে নিন। এর ফলে তা সহজেই মনে রাখতে পারবেন।

ইন্টারনেট কম ব্যবহার
সামগ্রিকভাবে না হলে কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা ইন্টারনেটে খুঁজি। এর ফলে আমাদের মস্তিষ্ক অলস হয়ে পড়তে পারে। তাই যেকোনো প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আগে কিছুক্ষণ নিজে সেই উত্তর মনে করার চেষ্টা করুন। এর ফলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে এবং ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও কমবে।

ভিজ্যুয়ালাইজ করুন 
ফোন বা ল্যাপটপে অনেকেই রিমাইন্ডার দিয়ে রাখেন। এর কারণ কোনো কিছু দেখলে তা ভালোভাবে মনে রাখা যায়। যেমন- দুধ, ডিম, মাংস, সবজি নেওয়ার জন্য অনেকে রিমাইন্ডার দিয়ে থাকি। তাই তা ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। অনেকে আবার কোনো কাজ করার আগে একবার কল্পনা করে দেখে নেন, কিভাবে, কোন উপায়ে সেই কাজটি করছেন। মনে মনে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে নিন। এর ফলে স্মৃতিশক্তি মজবুত থাকে।

ব্যায়াম করুন
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সুনিশ্চিত করতে ব্যায়াম সাহায্য করবে। ব্যায়াম স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে সাহায্য করবে। কারণ ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। 

সূত্র : হেলথলাইন