এশিয়া কাপ খেলতে আজ শ্রীলংকা যাচ্ছে বাংলাদেশ দল

এশিয়া কাপ খেলতে আজ শ্রীলংকা যাচ্ছে বাংলাদেশ দল

ফাইল ছবি

শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হবে ১৬তম এশিয়া কাপ ক্রিকেট। এ আসরে খেলতে আজ দুপুরে শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোর পথে রওনা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শ্রীলংকার মাটিতে প্রথম ম্যাচ খেলার পর পাকিস্তানের লাহোরে দ্বিতীয় ম্যাচ বাংলাদেশের। 

এশিয়া কাপ মিশনে রওনা হওয়ার আগে গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা দলে কতটা অবদান রাখতে পারেন, তার ওপর সবকিছু নির্ভর করে। আর হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, তিনি দলের প্রস্তুতি নিয়ে খুশি। 

‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান। চেনা এই দুই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্য আছে। বাংলাদেশের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তা মনে করিয়ে দিলেন, ‘আমরা দুই দলের বিপক্ষেই ভালো করেছি। দুই দলের বিপক্ষে কীভাবে জিততে পারি, সেই চেষ্টা করব। এর আগে এশিয়া কাপে দুই দলের সঙ্গে আমাদের ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। আমি মনে করি, দুই দলই আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।’

দলের প্রস্তুতি নিয়ে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘প্রস্তুতি নিয়ে খুবই খুশি। আমরা ফিটনেস ও মেডিকেল দিয়ে শুরু করেছিলাম। স্কিল নিয়ে কাজ করেছি সাতদিন। পরের সাতদিন আমরা কৌশল ও কার কী দায়িত্ব, তা নিয়ে কাজ করেছি। এরপর আমরা ব্যক্তিগত অনুশীলন করেছি।’

বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতির একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিল প্রস্তুতি ম্যাচ। হাথুরুসিংহে সেই ম্যাচ নিয়ে বলেন, ‘আমরা এমন ম্যাচ অনেক খেলেছি। এ ধরনের ম্যাচে ইন্টেন্সিটি ধরে রাখা খুব কঠিন। কিন্তু এবার ছেলেরা প্রথম বল থেকে শেষ পর্যন্ত ইন্টেন্সিটি ধরে রেখেছে, এটা খুব কম দেখা যায়। আমি সব মিলিয়ে খুশি।’

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে অধিনায়ক সাকিব বলেন, ‘কোচ যেটা বললেন যে খুব ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। আমিও যতদূর কথা বলেছি এবং জেনেছি যে সবাই খুব ভালো প্রস্তুত অবস্থায় আছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবাদত (হোসেন) আমাদের দলের অংশ হতে পারছে না। দলের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ ছিল সে। সেই জায়গা থেকে আমাদের জন্য এটা একটু ধাক্কা। তার পরও যে ধরনের প্রস্তুতি এবং স্কোয়াড আমাদের আছে, আমার মনে হয় যে আমরা অনেক দূর যেতে পারব। তবে প্রথম ব্যাপার যে আমাদের প্রথম দুটি ম্যাচ খেলতে হবে এবং কোয়ালিফাই করতে হবে (পরের ধাপের জন্য)। আমরা একটা একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই। এমন নয় যে একবারেই চিন্তা করছি কোথায় যাব। প্রতিটি ম্যাচ আমরা চিন্তা করব এবং ওভাবেই প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করব, ভালো ফল করার চেষ্টা করব। যদি সুযোগ থাকে, সব ম্যাচেই জয়ের চেষ্টা করব।’

সদ্য সাবেক ওয়ানডে দলনায়ক তামিম ইকবালকে ছাড়াই এশিয়া কাপ খেলবে বাংলাদেশ। তিনি সম্প্রতি ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেন, পরে যা সাকিবের কাঁধে পড়েছে। সাকিবের নেতৃত্বে যখন এশিয়া কাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, তখন তামিম মাঠে ফেরার লড়াই করছেন বিশ্বকাপে দৃষ্টি রেখে। দেশের ইতিহাসেই সেরা ওপেনার বিবেচিত তামিম বিশ্বকাপের আগে ফিট হয়ে উঠতে পারেন কিনা, সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে বিশ্ব আসরে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের উপস্থিতি দলে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সাকিব। তবে তিনি সঙ্গে এও বলছেন, দলে অবদান রাখতে পারাটাই সবচেয়ে জরুরি।

পিঠের নিচের অংশে ব্যথার চিকিৎসা নিয়েছেন লন্ডনে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে ইনজেকশন দিয়েছেন। এখন তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চলছে। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানালেন, বিশ্বকাপে তামিমকে পাওয়া যাবে বলেই ধরে নিচ্ছেন তিনি। অবসর ভেঙে তামিমের ফেরা কতটা স্বস্তির— এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেছেন, ‘যেকোনো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দলে তারা কতটা অবদান রাখতে পারে, এটার ওপর অবশ্যই নির্ভর করে সবকিছু। তবে অবশ্যই অভিজ্ঞতার তো একটা দাম আছে এবং অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দলে থাকলে কন্ডিশন সম্পর্কে কিংবা বড় বড় টুর্নামেন্ট সম্পর্কে যখন একজন ক্রিকেটারের অভিজ্ঞতা থাকে ও তা যখন ভাগাভাগি করে, জিনিসটা অনেক সহজ হয়ে যায়, বিশেষ করে যারা নতুন দলে আসে।’

আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহর অবশ্য জায়গা হয়নি এশিয়া কাপের মূল স্কোয়াড কিংবা স্ট্যান্ড বাই তালিকায়। বিশ্বকাপের মূল পরিকল্পনায় তিনি নেই বলেই তাই ধরে নেয়া যায়। এ মিশনে বরং অপেক্ষাকৃত তরুণদের বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। তৌহিদ হৃদয় এরই মধ্যে দলের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। এছাড়া ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিম ও পেসার তানজিম হাসান সাকিব বাংলাদেশ দলে জায়গা করে নিয়েছেন।