মুক্তিপণের বিনিময়ে ছাড়া পেলেন অপহৃত ব্যবসায়ী, আটক ২

মুক্তিপণের বিনিময়ে  ছাড়া পেলেন অপহৃত ব্যবসায়ী, আটক ২

সংগৃহিত ছবি।

বোয়ালখালীতে অপহারণকারীদের কবল থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে বিকাশ এজেন্ট শহীদুল্লাহ টেলিকমের মালিক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (২৬)। গত সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অপহৃত হওয়ার পর মুক্তিপণ দিয়ে সন্ধ্যায় ছাড়া পান তিনি । তিনি পশ্চিম গোমদী বহদ্দার পাড়ার ইউসুফ তালুকদার বাড়ির মো.আমিনুর রহমানের ছেলে।

এঘটনায় মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর ওইদিন রাতে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই অপরহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কধুরখীল কৈবর্ত্যপাড়া এলাকার মাধব দাসের ছেলে চন্দন দাস (২৯) ও পোপাদিয়া ৬নং ওয়ার্ডের মহতরম বাড়ি এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক আবু তালেব (২৮)।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারদিন মুস্তাকিম তাসিন এর আদালতে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে চন্দন ও আবু তালেব জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর।

মামলা সূত্রে গেছে, সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বোয়ালখালী পৌরসভার কধুরখীল গুইলদ্যাখালী এলাকা থেকে ব্যবসায়ী শহীদুল্লাহকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে নেয় সংঘবদ্ধ চক্রটির সদস্যরা। এরপর অটোরিকশায় থাকা ব্যক্তিরা মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ী শহীদুল্লার বিকাশ একাউন্ট থেকে অপহরণকারীদের তিনটি বিকাশ একাউন্ট নাম্বারে ১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এছাড়া ব্যবসায়ীর ব্যবহৃত প্রায় ৬২ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ এলাকায় তাকে ছেড়ে দেয়।

অপহৃত শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সোমবার সকাল ১১টার দিকে পূর্ব কালুরঘাটের রুদ্র টেলিকমের দোকানদার চন্দন দাস তার দোকানে যেতে বলে। ব্যবসায়িক সূত্রে যোগাযোগ থাকায় দুপুর ২টার দিকে মোটর সাইকেলে তার দোকানে গিয়ে দোকান বন্ধ দেখতে পাই। তাকে ফোন করলে সে খাবার খেতে বাড়িতে গেছে জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলে। সে আসার অপেক্ষায় থেকে কধুরখীলের মুক্তিযোদ্ধা রিভারভিউ এলাকায় অবস্থান করছিলাম। এসময় চন্দন ফোনে জানায় যে, সে দোকানে চলে এসেছে। রিভারভিউ থেকে মোটর সাইকেলে তার দোকানে আসার পথে গুইলদ্যাখালী ভাঙা ব্রিজে পৌঁছলে ৮/১০ জন ব্যক্তি পথরোধ করে। এসময় তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নেয়। তাদের একজন আমার মোটর সাইকেল ও আরো একটি সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে অনুসরণ করতে থাকে। এরমধ্যে অটোরিকশায় থাকা ব্যক্তিরা আমার বিকাশ নাম্বার থেকে টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেয়। এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে সন্ধ্যায় শ্রীপুর-খরণদ্বীপ এলাকায় আমার মোটর সাইকেলটি রেখে আমাকে ছেড়ে দেয়।’

 

তবে চক্রটিকে রক্ষায় সরকার দলীয় স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা তদবির করছেন বলে জানা গেছে। ওই নেতার ছত্রছায়া এই চক্রটি নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।

 

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত দুই আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অনেক তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়িক যোগাযোগের কারণে পূর্ব কালুরঘাটের দোকানদার চন্দনই এ পরিকল্পনার ছক কষে। এ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’