প্যারিস অলিম্পিকে রাশিয়ার পতাকা না রাখার সিদ্ধান্ত

আগামী বছর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বসবে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় আয়োজন অলিম্পিক। সে আসরে রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানায়নি ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)।

এবার অলিম্পিকে রাশিয়ার পতাকা থাকা বা না থাকা নিয়ে কঠোর বার্তা দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, প্যারিস অলিম্পিকে ‘আগ্রাসনবাদী’ রাশিয়ার পতাকা থাকতে পারে না। এমন খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। ইউক্রেনে মস্কোর এই অভিযানের জের ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বেও দেশগুলো রাশিয়াকে বয়কট করেছে। এরই ছাপ পড়েছে খেলাধুলার আসরগুলোতে। তাই কাতার বিশ্বকাপেও দেখা যায়নি রাশিয়াকে।

এএফপির দেওয়া খবর অনুযায়ী ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত বুধবার বলেছেন, ‘প্যারিস অলিম্পিক গেমসে রাশিয়ার পতাকা থাকতে পারে না... বিশেষ করে এমন সময়ে যখন রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে।’

রাশিয়ার পতাকার বদলে নিরপেক্ষ প্রতিযোগী হিসেবে যেসব ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকে অংশ নিতে চায় তাদের সম্ভাব্য উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তার জবাবে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমি আশা করি, এটি অলিম্পিক বিশ্বের বিবেকের সিদ্ধান্ত। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) কি সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত তা আয়োজক রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে না।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘(আইওসি সভাপতি) টমাস বাখের ওপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে।’

রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের পর দেশটি ও তাদের মিত্র বেলারুশকে বিভিন্ন ক্রীড়ার আসরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে যুদ্ধ সত্ত্বেও দেশ দুটির ক্রীড়াবিদদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের নাম ছাড়া কেবল নিরপেক্ষ খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতার সুযোগ দিতে সুপারিশ করেছে আইওসি।

এএফপি বলেছে, (রাশিয়া থেকে) বৈশ্বিক খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার অনুমতিপ্রাপ্তদের অবশ্যই কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে নিরপেক্ষ পতাকার অধীনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং তারা ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেনি, এটা প্রমাণ করার মতো বিষয়ও রয়েছে।

এমন এক পরিস্থিতিতে ফরাসি দৈনিক এল’ইকুইপেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘অবশ্যই, প্যারিস গেমসে রাশিয়ান পতাকা থাকতে পারে না। আমি মনে করি, এই বিষয়ে ঐকমত্য আছে। (অলিম্পিকের মঞ্চে) একটি দেশ হিসেবে রাশিয়ার জন্য কোনো স্থান নেই। বিশেষত এই দেশটি যখন যুদ্ধাপরাধ করেছে, (ইউক্রেন থেকে) শিশুদের বিতাড়িত করেছে।'

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যে প্রশ্নে অলিম্পিক বিশ্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা হলো- (এই ধরনের ইভেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য) কখনো কখনো সারাজীবনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া এই রাশিয়ান ক্রীড়াবিদদের কীভাবে জায়গা দেওয়া হবে।

এমনকি এই ক্রীড়াবিদদের অনেকে (রাশিয়ায়) সরকারি নিপীড়নের শিকারও হয়ে থাকতে পারেন।’

তিনি মনে করেন, আইওসিকে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা ইউক্রেনীয়দের জন্য ন্যায্য হবে।

গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর দেশটিতে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর আয়োজন করা হয়নি। এমনকি এই ধরনের বড় প্রতিযোগিতা থেকে এই দুটি দেশের জাতীয় প্রতীকও বাদ দেওয়া হয়েছে।

প্যারিস অলিম্পিকের আসর শুরু হবে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই। চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।