নৌকাবাইচের আনন্দে মাতল জামালপুরবাসী

নৌকাবাইচের আনন্দে মাতল জামালপুরবাসী

ফাইল ছবি

তবলার তালে তালে বৈঠার টান। নদীর দুই পাড়ে দর্শকের টান টান উত্তেজনা ও বাইচে নৌকার মাঝিদের হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো গানের সঙ্গে বাহারি রঙের নৌকার ছুটে চলা। চলছে প্রতিযোগিতা কে যাবে কার আগে। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এ নৌকাবাইচ দেখতে নদীর দুই পাড়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষের ভিড়। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই।

মনমাতানো এ দৃশ্য দেখা যায় জামালপুর পৌর শহরের পুরনো ফেরিঘাট এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদে।

আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা জামালপুর সমিতির আয়োজনে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জামালপুর পৌরসভার যৌথ সহযোগিতায় এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতির সভাপতি হাছান মাহমুদ রাজার সভাপতিত্বে এ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি।

এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডের খেলায় জামালপুরের মেলান্দহ, ইসলামপুর, সরিষাবাড়ী উপজেলা ও শেরপুরের জেলা থেকে বাংলার বাঘ, মধ্যেরচরের একতা, তুফান, মনিরাজ, দশের দোয়া, রকেট, বাংলার সম্রাট, দিগন্ত ও ময়ূরপঙ্খীসহ ১৫টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রথম রাউন্ডের খেলায় ১৫টি নৌকার মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ৮টি নৌকা ফাইনাল রাউন্ডের জন্য নির্ধারিত হয়। এ ৮টি নৌকাই আজ নৌকাবাইচের ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

বাইচের মাধ্যমে ইসলামপুর উপজেলার সোনামুখী পূর্বপাড়া এলাকার ‘রকেট’চ্যাম্পিয়ন হয়। রানার্স আপ হয় একই উপজেলার সাজালের চর এলাকা ‘মনিরাজ’। এ প্রতিযোগিতায় তৃতীয়স্থান অর্জন করে মেলান্দহ উপজেলার দক্ষিণ ঝাউগড়া এলাকার ‘একতা’। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

এ নৌকাবাইচ দেখতে পৌর শহরের পুরনো ফেরিঘাট এলাকা থেকে ছনকান্দ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাড়ে নারী ও শিশুসহ লক্ষাধিক মানুষ জড় হয়। ঢাক-ঢোল ও তবলার তালে তালে চলছিল সারিগান। এ সময় দুই পাড়ে আনন্দ-উল্লাসে মাতেন সাধারণ মানুষ। এ প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড়ে নানা পসরা সাজিয়ে দোকানিরা বসান দোকান। নদীর ওপরের জামালপুর-শেরপুরে যাতায়াতের একমাত্র সেতুটিতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। তারা উপভোগ করেন গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ।

এদিনের প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।