দেড়শ বছরের বৈরিতার উদযাপন

দেড়শ বছরের বৈরিতার উদযাপন

সংগৃহীত

কেউ কেউ বলেন, প্রাচীন ইনকা সভ্যতায় পরাজিত সৈনিকদের হত্যা করে তাদের মাথার খুলি দিয়ে বিজয়ীদের জয়োল্লাস থেকেই ফুটবল খেলার শুরু। চীনের প্রাচীন একটি খেলার সঙ্গে মিল থাকায় বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের মতে ফুটবল আসলে ‘মেড ইন চায়না’।

তবে ফুটবলের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে নেই চীন বা আন্দিজের কোনো দেশ। বরং বেশিরভাগ খেলাই যাদের হাতে পেয়েছে নিয়মকানুনের ব্যকরণ আর ছড়িয়েছে উপনিবেশে, সেই ইংরেজরাই খেলেছিল প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ। ১৮৭২ সালের ৩০ নভেম্বর গ্লাসগোর হ্যামিলটন ক্রিসেন্ট এলাকায় প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ড আর স্কটল্যান্ডের মধ্যে, খেলার ফল গোলশুন্য সমতা।

সেই প্রথম ম্যাচের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যেই ফিফা অনুমোদিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিরতিতে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। ৪-১২ সেপ্টেম্বর ফিফা রেখেছিল ইন্টারন্যাশনাল ব্রেক, শেষ দিনে প্রীতি ম্যাচে হ্যাম্পডেন পার্কে মুখোমুখি হবে হ্যারি কেইন আর অ্যান্ডি রবার্টসনের দল।

শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের চেয়ে জয়ের পাল্লায় এগিয়ে ছিল স্কটল্যান্ডই। প্রথম ১৬ ম্যাচের ১০টিতেই জিতেছিল স্কটিশরা। ১৯২০ এবং ১৯৩০ এর দশকেও স্কটল্যান্ড ছিল শ্রেয়তর দল। তবে আস্তে জনসংখ্যায় ১০ গুণ বড় ইংল্যান্ডের সঙ্গে আর পেরে ওঠেনি স্কটল্যান্ড।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে যাত্রা শুরু করলেও ক্রমশ পিছিয়ে পড়া স্কটল্যান্ড ১৯৯৮ সালের পর আর বিশ্বকাপেই খেলতে পারেনি, ৮ আসরে অংশ নিয়ে কোনোবারই পারেনি গ্রুপ পর্ব পার করতে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড ১৯৬৬ সালের চ্যাম্পিয়ন, ১৯৭৮ সালের পর থেকে ২০২২ পর্যন্ত কেবল একটা আসরেই খেলার যোগ্যতা হয়নি তিন সিংহের। সেটা ১৯৯৪ সালে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এখন বিশ্বের সবচেয়ে জমজমাট পেশাদার লিগ, ম্যানচেস্টার সিটি ইউরোপের সেরা দল। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের সেল্টিক, গ্লাসগো রেঞ্জার্সের সেই সুদিনও আর নেই। তাই ১৫০ বছরের দ্বৈরথের উত্তাপ খুব একটা চড়া নয়। স্কটল্যান্ডের কোচ স্টিভ ক্লার্ক বলেছেন, ‘আমার জীবদ্দশায় ইংল্যান্ড বেশ খানিকটা এগিয়েছে। আমরাও ব্যবধান খানিকটা কমিয়ে আনতে চাই আর মঙ্গলবার রাতে দেখব আমরা কতটা কাছাকাছি এসেছি।’

ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট কথা বলেছেন কূটনীতির ভাষায়। সরাসরি কিছু না বলে শিষ্টাচারের শব্দে বলেছেন, ‘আমাদের দলের সামনে বেশ কঠিন একটা পরীক্ষা। একটা উঁচু মানের দলের বিপক্ষে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমার খেলোয়াড়রা কি করতে পারে সেটাই দেখব।’